মাকে হত্যার পর মেয়েকে অপহরণ, পরে উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় মাকে কুপিয়ে ও মাইক্রোবাসের ধাক্কা দিয়ে খুনের পর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে দর্শনা পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷ মেয়ের সাবেক স্বামী ও তাঁর সহযোগীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷
ঘটনার আট ঘণ্টা পর পুলিশ যশোরের চৌগাছা উপজেলা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে।
স্ত্রীকে খুন ও মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে গৃহকর্তা বৃহস্পতিবার রাতেই দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তাঁর মেয়ের সাবেক স্বামী গোয়াতলী গ্রামের আতিয়ার রহমান, তাঁর বন্ধু একই গ্রামের আবদুল লতিফসহ অজ্ঞাতনামা পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
মেয়েটির পরিবার ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে আতিয়ার কয়েকজন অপরিচিত লোককে সঙ্গে নিয়ে ওই মেয়ের বাবার বাড়িতে ঢুকে তঁাকে (মেয়ে) মাইক্রোবাসে ওঠানোর চেষ্টা করেন। এ সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ লোক ছিলেন না৷ মাইক্রোবাসে ওঠানোর সময় বাধা দিতে গেলে তাঁরা মেয়ের মাকে কুপিয়ে জখম করেন। মেয়েকে মাইক্রোবাসে ওঠানোর পর মা ওই গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় মাইক্রোবাস দিয়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে তাঁরা মেয়েকে নিয়ে চলে যান৷ মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মা গুরুতর আহত হয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সউদ কবীর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই মেয়ে জানান, তাঁকে একটি মাইক্রোবাসে করে চৌগাছায় নিয়ে এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখা হয়। এরপর ওই ব্যক্তির কাছে ঘটনা খুলে বললে তিনি তাঁকে ছোট ফুফু ফাতেমা খাতুনের বাড়িতে পৌঁছে দেন। সেখান থেকে বাড়িতে খবর দিলে পুলিশ গতকাল শুক্রবার ভোর চারটার দিকে তাঁকে সেখান উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
মেয়ের বাবা অভিযোগ করেন, আতিয়ার তাঁর বোনের ছেলে৷ ২০০৭ সালে বোনের আগ্রহেই তিনি আতিয়ারের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন। বিয়ের সময় শর্ত দেওয়া হয়, মেয়ের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা রাখতে হবে এবং গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাস করতে হবে। বিয়ের পর আতিয়ার চৌগাছা উপজেলা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু দুই বছরের মাথায় অতিয়ার তাঁর মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন৷ এ কারণে বনিবনা না হওয়ায় ২০১১ সালে তাঁর মেয়ে ও আতিয়ারের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তার পর থেকে আতিয়ার প্রায়ই তাঁর মেয়েকে দেখে নেবেন, তুলে নিয়ে যাবেন ও খুন করবেন বলে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
দামুড়হুদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিকদার মশিউর রহমান জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে৷ আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে৷