'পলাতক' আসামিদের অত্যাচারে বাদীর পরিবার গ্রামছাড়া

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের অত্যাচারে বাদীর পরিবার গ্রামছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সুযোগে আসামিরা বাদীর সব কৃষিজমিও দখল করে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও কাজ হয়নি বলে বাদীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
বাদীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুনারুঘাটের বালুমারা গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহমানের সঙ্গে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে তাঁর ভাই ও সৎভাইদের বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে আদালতে বেশ কয়েকটি মামলাও চলছে।
২০০৯ সালে প্রতিপক্ষের দায়ের করা একটি মামলায় আবদুর রহমান কারাগারে ছিলেন। ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর আবদুর রহমানের বড় ছেলে মিলন মিয়া (৩২) খুন হন। ওই ঘটনায় মিলনের মা রাবেয়া খাতুন ভাশুর, দেবরসহ ১৪ জনকে আসামি করে চুনারুঘাট থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর ওই মামলার রায় হয়। তাতে ১২ জনের যাবজ্জীবন করাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল সিলেট আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার দেবনাথ।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে পাঁচজন কারাগারে থাকলেও পলাতক রয়েছেন আবদুর রশিদ, আবদুল কুদ্দুস, আবদুল আজিজ, আবদুল হক, আবদুল কাদির, সিদ্দিক আলী ও আবির মিয়া। আইনে তাঁদের পলাতক থাকার কথা বলা হলেও তাঁরা তাঁদের বাড়িতেই বাস করছেন। পাশাপাশি মামলার রায়ে ক্ষুব্ধ ওই আসামিরা আবদুর রহমান ও তাঁর পরিবারের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানো এবং বাড়িঘরে হামলার কারণে শঙ্কিত হয়ে পুরো পরিবারটি দীর্ঘদিন থেকে পালিয়ে আছে। আর এ সুযোগে আসামিরা তাঁর কৃষিজমি দখল করে নিয়েছেন। তাঁরা বাদীর পরিবারের বসতবাড়ির জমিও দখলের পাঁয়তারা করছেন।
বাদীর পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) ও চুনারুঘাট থানায় বেশ কয়েকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তবে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুর রশিদ বলেন, মামলা-মোকদ্দমা নিয়েই তাঁদের ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। জমি দখল করবেন কীভাবে।
আবদুর রহমান বলেন, তিনি একজন কৃষক। এ বিরোধে শুধু জমিজমাই নয়, দুই সন্তানকে হারাতে হয়েছে তাঁর। বড় ছেলে মিলন মিয়া খুন হয়, আর দ্বিতীয় ছেলে জুয়েল মিয়া তার দুই বছর আগে গুম হন। ওই ছেলের লাশ এখন পর্যন্ত তাঁরা পাননি।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অমূল্য কুমার চৌধুরী বলেন, পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।