কামারুজ্জামানের আপিলের শুনানি চলছে

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের করা আপিলের ওপর শুনানি চলছে৷ গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ দ্বিতীয় দিনের মতো এ শুনানি গ্রহণ করেন।
আদালতে কামারুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, মো. নজরুল ইসলাম ও শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক। সকাল পৌনে ১১টা থেকে মাঝে বিরতি দিয়ে বেলা একটা পর্যন্ত শুনানি চলে৷
গতকাল শুনানিতে আইনজীবী নজরুল ইসলাম পেপারবুক থেকে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অভিযোগ (সৈয়দ আবদুল হান্নানের প্রতি অমানবিক আচরণ), এই অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী মোহন মুন্সী, তৃতীয় সাক্ষী জহুরুল হক মুন্সী ও চতুর্দশ সাক্ষী মজিবুর রহমান খানের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, কামারুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীরা শেরপুর কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল হান্নানকে প্রায় নগ্ন করে শহরের রাস্তায় হাঁটাতে হাঁটাতে চাবুকপেটা করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তাঁর বিরুদ্ধে আনা সাত অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছে। এর মধ্যে সোহাগপুর ‘বিধবাপল্লীতে’ নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড ও গোলাম মোস্তফা হত্যার দায়ে (তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ) কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড, বদিউজ্জামান, দারাসহ ছয়জনকে হত্যার (প্রথম ও সপ্তম অভিযোগ) দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সৈয়দ আবদুল হান্নানের প্রতি অমানবিক আচরণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় যাবজ্জীবন ও ১০ বছরের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাবে।
দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে এবং সাজা বাতিল করে খালাস চেয়ে গত বছরের ৬ জুন আপিল করেন কামারুজ্জামান৷ ২৯ সেপ্টেম্বর আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেয় আসামিপক্ষ। ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেনি।