জলকপাট অকেজো চার গ্রাম জলাবদ্ধ

জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য নির্মাণ করা যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার দিগদানা গ্রামের সংযোগ খালের জলকপাটটি (স্লুইসগেট) অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে চলতি বর্ষায় কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বিলের ৩০০ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জলকপাটের পশ্চিম পাশের লোহার দুটি কপাটের একটি খালের পলির সঙ্গে আটকে গেছে। অপরটিকে লোহার রড দিয়ে ওপর থেকে কোনো রকমে দেড় ফুট উঁচুতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ কপাটের তলার সামান্য ফাঁকা দিয়ে একটু একটু পানি বের হচ্ছে। পানি ঠিকমতো চলাচল করতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইউনুচ আলী বলেন, ভরা বর্ষার আগেই জলকপাটটি সংস্কার না করলে দিগদানা, উজ্জ্বলপুর ও বাঁকড়া গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। গত বছর দিগদানা গ্রামের পশ্চিম বিলের কমপক্ষে ৩০০ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করা যায়নি। এ বছর আরও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ কপোতাক্ষ নদে কোনো স্রোত নেই। এবার নদের পানিই বা কতটা নিষ্কাশিত হবে তা বলা যাচ্ছে না।
দিগদানা গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, ‘চার বছর ধরে দুটি কপাট স্থায়ীভাবে খালের তলার পলির সঙ্গে আটকে আছে। গত বছর বিল ছাপিয়ে বাড়িঘর ও রাস্তার ওপর পানি উঠে যায়। আমরা অনেক কষ্টে জলকপাটের একটি কপাট লোহার রড দিয়ে দেড় ফুট উঁচু করে টাঙিয়ে দিই। তবে কপাটটি যেকোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে। এ বছর ভরা বর্ষা শুরুর আগেই জলকপাটটি সংস্কার করলে হয়তো জলাবদ্ধতা থেকে কিছুটা মুক্তি মিলতে পারে।’
জানা গেছে, ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া, উজ্জ্বলপুর, দরগাডাঙ্গা ও দিগদানা গ্রামের পানি দিগদানা গ্রামের পশ্চিম বিলে গিয়ে জমা হয়। একটি সংযোগ খালের মাধ্যমে ওই পানি বের করে দেওয়া হয় কপোতাক্ষ নদে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে ১৯৯৪ সালে খাল খনন কর্মসূচির আওতায় এ সংযোগ খালটি খনন করে গ্রামের কারিগরপাড়ায় খালের ওপর জলকপাটটি নির্মাণ করা হয়। এ জলকপাট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এলজিইডির তত্ত্বাবধানে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে একটি সমবায় সমিতি গঠন করা হয়। প্রথম কয়েক বছর রক্ষণাবেক্ষণ করা হলেও পরে তা মুখ খুবড়ে পড়ে।
এলজিইডির ঝিকরগাছা উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু বলেন, ২০ বছর আগে খাল খনন কর্মসূচির আওতায় জলকপাটটি নির্মাণ করা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। তার পরও সরেজমিন পরিদর্শন করে স্থানীয় মানুষের মতামত নিয়ে সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।