শিশুমৃত্যু রোধে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রশংসায় জাতিসংঘ

২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিরোধযোগ্য শিশুমৃত্যুর ঘটনা রোধে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিউজ সেন্টারের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রশংসা করা হয়। মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের কথাও এতে তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি লেক বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। ১৯৯১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পেরেছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে নতুনত্ব ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রতিশ্রুতির জন্য দেশটিকে ধন্যবাদ।’
এখন সম্মুখে বাংলাদেশের দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন অ্যান্থনি লেক। এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নবজাতক ও অল্প বয়সী শিশুমৃত্যুর হার এখনো বেশি।
বাংলাদেশ সরকার ও ইউনিসেফের তথ্যের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে শিশুমৃত্যু ঘটনার প্রায় ৬০ শতাংশ ঘটে থাকে শিশুর জন্মের প্রথম ২৮ দিনের মধ্যে। এসব শিশুর অধিকাংশ মারা যায় শ্বাসকষ্ট, জন্মকালীন সংক্রমণ, নির্ধারিত সময়ের আগেই জন্ম ও ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময়ের জটিলতায়।
৭১ শতাংশ গর্ভবতী নারী এখনো বাসাবাড়িতে সন্তান প্রসব করে থাকেন উল্লেখ করে ইউনিসেফ বলেছে, শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ বাংলাদেশের জন্য একটি ‘চ্যালেঞ্জ’।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাঁচ বছরের নিচে শিশুর মৃত্যুর প্রধান কারণ—নিউমোনিয়া, পানিতে ডুবে যাওয়া ও ডায়রিয়া। এ ক্ষেত্রে শিশুদের অপুষ্টিও একটি হুমকি। অপুষ্টির কারণে একই বয়সের ৪১ শতাংশ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। এসব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও প্রতিরোধযোগ্য শিশুমৃত্যু রোধে বাংলাদেশ সরকার ব্যাপক পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘সরল ও ব্যয়সাশ্রয়ী’ পদক্ষেপ জোরালো করার এবং অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণের অঙ্গীকার করেছে। সরকার তার পরিকল্পনার আওতায় নারী, কম বয়সী শিশু ও বেড়ে ওঠা শিশুদের পুষ্টিতে সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘কমিটমেন্ট টু চাইল্ড সারভাইভাল: এ প্রোমিজ রিনিউড’ হিসেবে পরিচিত ইউনিসেফের বৈশ্বিক উদ্যোগের সঙ্গে সংগতি রেখে যে ২৪টি দেশ শিশুমৃত্যুর হার ২০ জনে (প্রতি হাজার জন্মগ্রহণকারী শিশুর মধ্যে) নামিয়ে আনতে প্রচেষ্টা জোরালো করেছে, বাংলাদেশ তাদের একটি।
২০১৫ সালের মধ্যে শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনা ও মাতৃস্বাস্থ্যের অগ্রগতি নিয়ে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) ৪ ও ৫ অর্জনে ওই প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।