চট্টগ্রামে এক মাসে ৩৩ খুন

চট্টগ্রামে ৩৩টি খুনের ঘটনা ঘটেছে গত জুলাই মাসে। নগরের ১৬ থানায় ১৬টি এবং ১৪ উপজেলায় ১৭টি খুন হয়।
এসব খুনের মধ্যে নগরের বায়েজীদ বোস্তামী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবলীগের দুই গ্রুপে গোলাগুলিতে নিহত এবং রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারীতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহতের ঘটনা ছিল আলোচিত।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, অন্যান্য মাসের তুলনায় জুলাই মাসে খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে বলেছেন যাতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ মাসে ১৬টি, এপ্রিল মাসে ১৩, মে মাসে ১২ এবং জুন মাসে ১১টি খুনের ঘটনা ঘটে। শুধু জুলাই মাসে ঘটে ৩৩টি খুন। গত বছরের জুলাই মাসে হয়েছিল ১৪ খুন। উপজেলার ১৭টি খুনের মধ্যে তিনটি হয়েছে হাটহাজারীতে। এর মধ্যে রাউজান নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের নদীমপুর এলাকার ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ওরফে জসীমকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী হাটহাজারীর লাঙ্গলমোড়া এলাকায় গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। চন্দনাইশ, পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়ায় দুটি করে খুন হয়। এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়ার মরিয়মনগর এলাকায় গত ১৭ জুলাই বোরকা পরে দোকানে এসে হোসাইন নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ৯ জুলাই চন্দনাইশের বাগিচাহাট বাইন্নাপুকুরপাড় এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আবদুস সোবহানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া সীতাকুণ্ড, জোরারগঞ্জ, ফটিকছড়ি, ভূজপুর, রাউজান, বোয়ালখালী, সাতকানিয়া ও আনোয়ারায় একটি করে খুনের ঘটনা ঘটে।
নগরের ১৬ থানায় ১৬টি খুনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবলীগের দুই দলের মধ্যে গত ২৩ জুলাই গোলাগুলির ঘটনা। এতে মিরাজ হোসেন নামের এক রিকশাচালক নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা আমিনুল হক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে পুলিশ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে। প্রধান আসামি মেহেদী হাসান ও আবদুল কুদ্দুসকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বাকি খুনের ঘটনাগুলো পারিবারিক বিরোধসহ নানা কারণে ঘটেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, অধিকাংশ খুনের ঘটনা পারিবারিক। এর পরও খুনসহ অপরাধ কমাতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে। পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তারে সক্রিয় রয়েছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, খুনসহ অপরাধ দমনে পুলিশ দিনরাত কাজ করছে। এর পরও সামাজিক অস্থিরতার কারণে কিছু খুনের ঘটনা ঘটছে। খুনের ঘটনা কমাতে পুলিশ স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে কাজ করছে।
জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানান, ১৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।