'নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ' গঠনের প্রস্তাব

ভবন নির্মাণের বিধি (ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড) অনুসরণ ও বাস্তবায়নের জন্য একটি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এই নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন থাকবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘জাতীয় বিল্ডিং কোড হালনাগাদকরণ’ বিষয়ে সেমিনারে এ প্রস্তাব করা হয়। সেমিনারের আয়োজক ছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
সেমিনারে ভবনে অগ্নিনির্বাপণের বিষয় কঠোরভাবে মানা, কাঠামোগত নকশা হালনাগাদ করা, ভবন নির্মাণে কাঠের মতো বাঁশ ও ইস্পাতের ব্যবহার সংযুক্ত করা, ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলোয় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়েও তাগিদ দেওয়া হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান স্থপতি এ এস এম ইসমাইল। তিনি বলেন, বিল্ডিং বিধিতে প্রস্তাব করা হয়েছে, বিধি প্রয়োগের জন্য আলাদা যে কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে, তা বাস্তবায়নের পর সারা দেশের পৌরসভাগুলোকে তা মানতে হবে।
এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সেমিনারে প্রধান অতিথি গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, অবিলম্বে জাতীয় বিল্ডিং বিধি হালনাগাদকরণবিষয়ক প্রস্তাবগুলো আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এগুলো প্রয়োগের বিষয়ে নতুন কোনো আইন প্রণয়নের প্রয়োজন হলে তাও জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করে পাস করা হবে।
পূর্তমন্ত্রী বলেন, ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) যাঁরা প্রণয়ন করেছেন, তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, এর পরিবর্তন দরকার, কারণ সময়ের প্রয়োজনে ড্যাপে ত্রুটি পাওয়া যাচ্ছে। তাই ড্যাপ হালনাগাদ করা হচ্ছে। একইভাবে জাতীয় বিল্ডিং বিধিও পরিবর্তন বা হালনাগাদ করা হবে।
সেমিনারে বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আগের মতো একক কর্তৃপক্ষ থাকলেও কক্সবাজার ও কুয়াকাটা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জাতীয় বিল্ডিং বিধির নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে চলবে। ক্যান্টনমেন্ট কর্তৃপক্ষ নিজস্ব বিল্ডিং বিধি অনুসরণ করে থাকে। তা জাতীয় বিল্ডিং বিধি কর্তৃপক্ষের অধীনে আনা প্রয়োজন অথবা তাদের বিধিতে জাতীয় বিল্ডিং বিধির প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সংযুক্ত করা হোক।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন গণপূর্তসচিব মো. গোলাম রব্বানী, অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি পরিচালক স্নেহাল ভি সোনেজা, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি আহসানুল হক খান।
সেমিনারে সভাপতি ও হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবু সাদেক বলেন, ১৯৯৩ সালে জাতীয় বিল্ডিং বিধি প্রণয়নের পর ২০১৪ সালে তা হালনাগাদ করা হলো; যা অনেক আগেই দরকার ছিল।
সেমিনার শেষে জাতীয় বিল্ডিং কোড হালনাগাদকরণ বিষয়ে কর্মশালা হয়। এতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থাগুলো ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা অংশ নেন।