ময়মনসিংহে ভাঙনের মুখে চারটি গ্রাম

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারি ইউনিয়নের চারটি গ্রামের মানুষ ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য এ বছর একটি বাঁধ নির্মাণ করেন। কিন্তু বর্ষা আসতে না আসতেই বাঁধটি তলিয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদঘেঁষা ভাটিপাড়া, কাশিয়ারচর, খোদাবক্সপুর ও চর ভাবখালি গ্রাম।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই চারটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। বেশ কিছু গাছপালা ও দোকানপাট ইতিমধ্যে নদের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে পড়া ভাটিপাড়া গ্রামের একটি মসজিদ বাঁশের খুঁটি দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে।

এলাকার অনেকে জানান, সাত বছর আগে গৌরীপুর ও পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১০টি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়। গত বছরের বর্ষা থেকে ভাঙন বেড়ে যায়। গত বর্ষায় গৌরীপুরের পশ্চিম ভাটিপাড়া ও পূর্ব ভাটিপাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবারের এক হাজার একর ফসলি জমি ও বসতঘর ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর পরও সরকারিভাবে ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভাঙন রোধের জন্য এ বছর বর্ষার আগে চারটি গ্রামের লোকজন নিজেদের উদ্যোগে এক লাখ টাকা চাঁদা তুলে বালুর বস্তা ও বাঁশ দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করেন। কিন্তু বর্ষার শুরুতেই বাঁধটি তলিয়ে গেছে।

ভাটিপাড়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম ও আতিকুল ইসলাম জানান, তাঁদের সব ফসলি জমি ইতিমধ্যে নদের গর্ভে চলে গেছে। এখন শুধু ভিটে আছে। তাঁরা জানান, আগে তাঁদের পৈতৃক পেশা ছিল কৃষিকাজ। সাত বছরে তাঁদের সব জমি ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হয়ে যায়। এখন তাঁরা একেক সময় একেক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ বছর পানি আবারও বাড়লে বসতভিটাও বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ খান বলেন, ‘আমার ক্ষমতা সীমিত। ব্যক্তিগতভাবে আমি এক মাসের ভাতার টাকা বাঁধ নির্মাণের সময় দিয়েছিলাম।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ময়মনসিংহ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী খুশী মোহন সরকার জানান, বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন দেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।