ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও বাসিন্দারা জানেন না

৩৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে অনেক ভবন। আবার অনুমোদনদাতা সংস্থাও নিয়ম ভঙ্গ করে ভবন নির্মাণ করেছে। দোতলার অনুমোদন নিয়ে তিন বা চারতলা করেছেন অনেকে। আবার তিন বা চারতলার অনুমোদন নিয়ে অনেকেই পাঁচ বা ছয়তলা নির্মাণ করেছেন।সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবনে বসবাস করছেন ভাড়াটে লোকজন। ভবনগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। অনেক ভবনের ভাড়াটেরা জানেনও না সেটি ঝুঁকিপূর্ণ। নগরের কাউনিয়া প্রধান সড়কে সিরাজ মহল ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের একটি। এই ভবনে প্রায় এক হাজার মানুষ বসবাস করে। ভবনের ভাড়াটে মো. কামীম জানান, আট বছর ধরে তিনি সেখানে বসবাস করছেন। কিন্তু ভবনটি যে ঝুঁকিপূর্ণ, তা তিনি জানেন না। জাহিদুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, কয়েক দিন আগে ওই ভবনের দোতলার ছাদ থেকে বড় একটা অংশ খসে পড়েছে।সিরাজ মহলের মালিক মো. সিরাজউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘আমার ভবন ঝুঁকিপূর্ণ নয়। হয়রানি করার জন্য তালিকায় এর নাম ওঠানো হয়েছে। এ রকম টানা ছাদের মজবুত ভবন আর আছে কি না, আমার জানা নেই।’নগরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সৈয়দ ভবনে রয়েছে বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সেখানে ভবনের মালিকও বসবাস করছেন। ওই ভবনের লাভলী জুয়েলার্সের মালিক কাজল সরকার জানান, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। একই ভবনের পপুলার ওয়াচের মালিক মো. শওকত আকবর বলেন, ‘আমরা স্থান পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করছি।’

ভবনের মালিকপক্ষের একজন সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এক বছর সময় চেয়েছি। পুরোনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করছি।’

নগরের কাঠপট্টি সড়কের আহম্মেদ ক্লথ স্টোর, মিল্লাত ফার্মেসি, বেলায়েত হোসেন, জুম্মান ব্রাদার্স, সৈয়দ জুম্মান, অমৃত ভবন, সাধনা ঔষধালয়সহ সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ব্যবসা।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় রয়েছে সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের বিজ্ঞান ভবন, ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রাবাস সুরেন্দ্র ভবন, উপজেলা পরিষদের পুরোনো ভবন, আগরপুর রোডে মনু মিয়া গং, সার্কুলার রোডে সৈয়দ মানছুর আহম্মেদ, ঈশ্বরবসু রোডে সৈয়দ মঞ্জিল, হাসপাতাল রোডে মান্নান মৃধা, মেডিকেল কলেজ লেনে ক্ষণিকা, কলেজ রোডে ফরিদউদ্দিন ভবন, রূপাতলীতে নলছিটি প্লাজা, ইসরাইল তালুকদার ভবন ও সালাম চেয়ারম্যানের পুরোনো ভবন।সিটি করপোরেশন জানায়, এসব ভবন দ্রুত অপসারণের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সেগুলো ভেঙে ফেলা হবে।

নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোতালেব হাওলাদার বলেন, ‘যথাযথ নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ করা হয়নি, এমন দু-একটি অভিযোগ রয়েছে। তবে এরই মধ্যে আমরা চারটি ভবন ভেঙে দিয়েছি। এর আগে ১৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়া হয়। বর্তমানে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪।