সংঘর্ষের আশঙ্কা, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের লামকাইন গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত শুক্রবার গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে আশপাশের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার কমে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের সরদার পরিবার ও খাঁ পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার ব্রহ্মপুত্র নদে মাছ ধরা নিয়ে ওই দুই পরিবারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। পরদিন সকাল থেকে দুই পক্ষের লোকজন নিজ নিজ এলাকায় সশস্ত্র অবস্থান নেয়। পুনরায় সংঘর্ষ বাধার আশঙ্কায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করে পাগলা থানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এর পরও লামকাইন গ্রামের বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটেনি। ঘটনার পর থেকে ওই গ্রামের আশপাশের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম খান বলেন, ওই দুটি পরিবার নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে গিয়ে সামান্য ঘটনা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তবে আইনশৃঙ্খলা ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা করতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ওসি বলেন, শুক্রবারের সংঘর্ষের পর দুই পক্ষ সশস্ত্র অবস্থান নেয়। শনিবার থেকে ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে পুলিশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পাঁচবাগ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সারোয়ার মোর্শেদ বলেন, শনিবার থেকে তাঁর বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে না।
আবদুল হামিদ শিশু নিকেতনের সভাপতি মো. ফজলুল হক বলেন, সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি তাঁরা কয়েক দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছেন। লামকাইন গ্রামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রিপন মিয়া বলেন, ‘পরিস্থিতি ভালো না হলে সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাই কী করে। একই কথা বললেন হাবিবুর রহমান নামের আরেক অভিভাবক।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সরদার পরিবারের সদস্য মো. মোয়াজ্জেম সরদার বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় খাঁ পরিবারের লোকজনের হাতে আমাদের লোকজন আহত হয়েছে। ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’
খাঁ পরিবারের সদস্য ও পাঁচবাগ ইউপির সদস্য সিদ্দিক খাঁ বলেন, সমস্যা যাঁরা সৃষ্টি করেছেন, সমাধানের জন্য তাঁদের এগিয়ে আসতে হবে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিরোধ মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান তিনি।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম খান বলেন, পুলিশ প্রত্যাহার করা হলেও লামকাইন এলাকায় পুলিশের নজরদারি রয়েছে।