বঞ্চিতদের বিক্ষোভ নেতা অবরুদ্ধ

সিলেটে নগর কমিটির দুই নেতার নেতৃত্বে প্রায় ১২ বছর পর গঠিত হয়েছে নগর ও জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি। গত বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্র থেকে এ কমিটি ঘোষণার পর বঞ্চিতরা বিক্ষোভ করেন। গতকাল শুক্রবার তাঁদের তোপের মুখে পড়েন জেলার নতুন সভাপতি সাঈদ আহমদ।
নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় গতকাল দুপুরের দিকে বিএনপির এক নেতার বাসায় সাঈদ আহমদ গেলে সেখানে ক্ষুব্ধ কর্মীরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করলে নগরের ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকায় আরেক দফা বিক্ষোভের মুখে পড়েন।
২০০২ সালের নভেম্বর মাসে জেলা ও নগর ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। তিন বছর পর ওই দুই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ ঘোষণার পর গত বৃহস্পতিবার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। নুরুল আলম সিদ্দিকীকে নগর কমিটির সভাপতি ও সাঈদ আহমদকে জেলা কমিটির সভাপতি করা হয়। নতুন কমিটি ঘোষণার পরই নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল জুমার নামাজ শেষে সাঈদ আহমদ নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীর বাসায় যান। সাঈদ সেখানে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে কমিটিবিরোধী ছাত্রদলের শতাধিক নেত-কর্মী ওই বাসা ঘিরে রেখে নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে স্লোগান দেন। বিক্ষোভের মুখে সাঈদ ওই বাসায় প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন। খবর পেয়ে মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে সাঈদকে মুক্ত করে।
পুলিশ ছাত্রদলের বিদ্রোহী নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার পর ছাত্রদলের ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী মোটরসাইকেলে শাহরিয়ারের বাসায় যান। এ সময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর হস্তক্ষেপে তাঁরা সাঈদ আহমদকে নিয়ে পীর মহল্লার রাস্তা দিয়ে ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার দিকে যান।
সেখানে সাঈদ তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করছেন, এমন খবর পেয়ে ছাত্রদলের বিদ্রোহী নেতা-কর্মীরা হাউজিং এস্টেটের রাস্তার মুখ ছেড়ে সাপ্লাই এলাকায় যান। এ সময় দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়, দুই পক্ষই ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সাঈদ বিদ্যুৎ কার্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন।
নগর ছাত্রদলের সাবেক সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, ‘যারা নতুন কমিটিতে স্থান পেয়েছে, দলের জন্য তাদের কোনো ত্যাগ নেই। এ কমিটির সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে।’ বিমানবন্দর থানার ওসি শাহ জামান জানান, ছাত্রদলের সভাপতিকে অবরুদ্ধ করে রাখায় পুলিশ গিয়ে তাঁকে মুক্ত করে দিয়েছে। পরে আরেক দফা সংঘর্ষ হয়।
সাঈদ আহমদ বলেন, ‘কমিটিতে স্থান না পাওয়া নেতাদের প্ররোচনায় কিছুটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।’ এদিকে ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর পুলিশ রাতে জেলা ছাত্রদলের নতুন সভাপতিসহ আট নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. রহমতুল্লাহ জানান, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে।