আ.লীগই উন্নয়ন করে বাকিরা লুটে খায়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে হত্যা, লুট, সন্ত্রাস বেড়ে যায়। মানুষ না খেয়ে মরে। উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা দেখা দেয়। আমাদের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এখন এসব আর নেই। একমাত্র আওয়ামী লীগই উন্নয়ন করে, বাকি যারা আছে তারা লুটে খায়।’ 
আজ বুধবার রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় আসা মানে লুটপাট। ৯৮০ কোটি টাকা তারা লুটে নিয়ে গেছে। তার ছেলেরা টাকা পাচার করেছে। তারা লুটপাট করার জন্য আছে। তারা জনগণকে কিছু দিতে পারে না। কেবল নিতে পারে। তাদের লুটপাটের সেই টাকা আমরা ফেরত এনেছি।’
জনসভায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবার জয়ী করতে পীরগঞ্জবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা রংপুরকে বিভাগ করেছি। সিটি করপোরেশন করেছি। তিস্তা নদীর ওপর তিস্তা সড়ক সেতু করেছি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এখানে আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করার জন্য ছেলে জয়ের অবদান রয়েছে।’

বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের আমলে উত্তরাঞ্চলে আমরা দেখেছি দুর্ভিক্ষ। দেখেছি মঙ্গা। মানুষ না খেয়ে মারা যাওয়া দেখেছি। সেই উত্তরাঞ্চল থেকে মঙ্গা দূর করেছি। এখন আর মানুষকে না খেয়ে মরতে হয় না।’ 

দেশে সম্প্রতি সহিংস ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘মসজিদে কোনো মুসলমান মিথ্যা কথা বলতে পারে না। মসজিদে দাঁড়িয়ে যারা মিথ্যা কথা বলে, ইসলামের নামে যারা ধোঁকাবাজি দেয়, এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’

পীরগঞ্জের মানুষ আগে কখনো এত উন্নয়ন দেখেনি বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নের ধারা যাতে অব্যাহত রাখতে পারি, এজন্য নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করুন। নির্বাচনে জয়ী হলে আওয়ামী লীগ সব অসমাপ্ত কাজ করবে।’

দুপুর সোয়া ১২টায় প্রথম হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আসেন। এরপর ১২টা ৩৫ মিনিটে আরেকটি হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুত্রবধূ ক্রিস্টিন ওভারমায়ার আসেন। সেখান থেকে ফতেপুর গ্রামে প্রয়াত স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যদের কবর জিয়ারত করেন। তাঁরা বেলা দুইটায় সভামঞ্চে যান। 

জনসভায় পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতহারুল হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাংসদ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংসদ ফজলে রাব্বী মিয়া, সাংসদ আব্দুল মান্নান, সাংসদ আবুল কালাম আজাদ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

জনসভার আগে প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলের পাশে করতোয়া নদীর ওপর নির্মিত এম এ ওয়াজেদ মিয়া সেতু, জেলা পরিষদ ডাকবাংলা ও বিভাগীয় আঞ্চলিক পাসপোর্ট ভবন, চককরিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন উদ্বোধন করেন। এ ছাড়াও মেরিন একাডেমি, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, বিভাগীয় কমিশনারের ভবন, সার্কিট হাউসের বর্ধিত এনেক্স ভবন, পীরগঞ্জ পৌরসভার নামফলকের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। জনসভার স্থান ছাড়া বাইরে উপজেলা বাসস্ট্যান্ড থেকে থানা রোড, লালদিঘি থেকে পীরগঞ্জ, প্রধান সড়কসহ উপজেলার প্রতিটি সড়কে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ছিল।