'বাকি ওয়াদা পূরণ আগামীবার'

পীরগঞ্জে গতকাল আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও পুত্রবধূ ক্রিস্টিন উপস্থিত জনতাকে শুভেচ্ছা জানান  ছবি: বাসস
পীরগঞ্জে গতকাল আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও পুত্রবধূ ক্রিস্টিন উপস্থিত জনতাকে শুভেচ্ছা জানান ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিন। নির্বাচনে জয়ী হলে অসমাপ্ত কাজ শেষ করব। বিএনপি ক্ষমতায় এলে হত্যা, লুটপাট, সন্ত্রাস বেড়ে যায়। উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা দেখা দেয়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এখন এসব আর নেই।’গতকাল বুধবার রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় আসা মানে লুটপাট। ৯৮০ কোটি টাকা তারা লুটে নিয়ে গেছে। তাঁর ছেলেরা টাকা পাচার করেছে। তারা লুটপাট করার জন্য আছে। তাদের লুটপাটের সেই টাকা আমরা ফেরত এনেছি।’জনসভায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবার জয়ী করতে পীরগঞ্জবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা রংপুরকে বিভাগ করেছি। সিটি করপোরেশন করেছি। তিস্তা নদীর ওপর তিস্তা সড়ক সেতু করেছি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় করেছি।’শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এখানে আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান রয়েছে।’ বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তাদের আমলে উত্তরাঞ্চলে আমরা দুর্ভিক্ষ দেখেছি, মঙ্গা দেখেছি। মানুষকে না খেয়ে মারা যেতে দেখেছি। আমরা সেই উত্তরাঞ্চল থেকে মঙ্গা দূর করেছি।’দেশের সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মসজিদে কোনো মুসলমান মিথ্যা কথা বলতে পারে না। মসজিদে দাঁড়িয়ে যারা মিথ্যা কথা বলে, ইসলামের নামে যারা ধোঁকাবাজি করে, তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।জনসভায় প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘মুই ফির আসিম’ (আমি আবার আসব)। আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চেয়ে সজীব বলেন, মহাজোটকে ভোট দিলে উন্নয়ন চলতে থাকবে। আর ধানের শীষে ভোট দিলে দেশে লুটপাট চলবে। বিদ্যুৎ থাকবে না।পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতহারুল হকের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সজীব ওয়াজেদ, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক, সাংসদ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরী, ফজলে রাব্বী মিয়া, আবদুল মান্নান, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।এর আগে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রথম হেলিকপ্টারে করে সজীব ওয়াজেদ পীরগঞ্জ আসেন। কিছুক্ষণ পর ১২টা ৩৫ মিনিটে আরেকটি হেলিকপ্টারে করে প্রধানমন্ত্রী ও পুত্রবধূ ক্রিস্টিন ওভারমায়ার আসেন। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হাজার হাজার মানুষ উপজেলার ফতেপুর হেলিপ্যাডের কাছে জড়ো হয়। হেলিপ্যাড থেকে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ফতেপুর লালদিঘি গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি ‘জয় সদনে’ যান। সেখানে ৩ তাঁকে স্বাগত জানান। এখানে শেখ হাসিনা সজীবের ফুফু জোহরা খাতুন ও চাচি রওশন আরা ওয়াহেদসহ অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে ক্রিস্টিনকে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে প্রয়াত স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কবর জিয়ারত করেন। তাঁরা বেলা দুইটায় সভামঞ্চে আসেন। জনসভার আগে প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলের পাশে করতোয়া নদীর ওপর নির্মিত এম এ ওয়াজেদ মিয়া সেতু, জেলা পরিষদ ডাকবাংলা ও বিভাগীয় আঞ্চলিক পাসপোর্ট ভবন, চককরিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া মেরিন একাডেমি, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, বিভাগীয় কমিশনারের ভবন, সার্কিট হাউসের বর্ধিত অ্যানেক্স ভবন, পীরগঞ্জ পৌরসভার নামফলকের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।