কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় আ.লীগ নেতাদের পশুর হাট

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মইজ্জ্যারটেকে অবস্থিত ওই আবাসিক এলাকায় পশুর হাট বসায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। 
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর ও কোষাধ্যক্ষ আবদুল করিম এ হাট বসিয়েছেন। আবাসিক এলাকাটিতে এখনো বসতি গড়ে ওঠেনি। এ সুযোগে সেখানে এবার পশুর হাট বসিয়েছেন তাঁরা। এ জন্য তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনও নেননি।
অনুমোদন না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে মোহাম্মদ আলী ও আবদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মইজ্জ্যারটেকের হাটটি হচ্ছে মূল হাট। ওখানে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় এখানে হাট বসানো হয়েছে। বাণিজ্য নয়, সেবার উদ্দেশ্যে এ হাট বসানো হয়েছে।’ তাঁরা এও জানান, জাহাঙ্গীরের প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহ আমান এন্টারপ্রাইজ ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মইজ্জ্যারটেকের বাজারটি ইজারা নিয়েছে।
উপজেলার আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে গতকাল জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন অবৈধ ও অনুমোদনহীন এ হাটের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। বৈঠকে চরলক্ষ্য ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘অবৈধ এ হাটের কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকেয়া পারভীন বলেন, ‘আমাদের অনুমোদন না নিয়ে এ হাট বসানো হয়েছে। তাই হাটটি তুলে দেওয়া হবে।’
এদিকে আবাসিক এলাকার দুই নিরাপত্তাকর্মী ২৪ সেপ্টেম্বর সিডিএ চেয়ারম্যানকে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘ঈদুল আজহা সামনে রেখে কিছু লোক কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এবং আমাদের বাধা অমান্য করে খেলার মাঠে গরু ও ছাগলের বাজার বসাতে বাঁশ নিয়ে আসে।’
সিডিএর চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘সিডিএর আবাসিক এলাকায় পশুর হাট বসানোর জন্য আমাদের কাছে কেউ আবেদন করেনি। আমরা কাউকে অনুমোদনও দিইনি।’
গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, আবাসিক এলাকায় বিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা, খেলার মাঠ ও ১৮ নম্বর সড়কের দুই পাশে গরু ও মহিষ বাঁধার জন্য বাঁশের খুঁটি পোঁতা হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার পাইকারি বিক্রেতারা গরু ও মহিষ নিয়ে হাটে আসতে শুরু করেছেন। প্রতিটি গরু ও মহিষের হাসিল ধরা হয়েছে এক হাজার টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার থেকে এই হাট বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। শনিবার থেকে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বাজার তদারকির জন্য অন্তত ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। আবদুল মালেক ও উজ্জ্বল নামের দুই পাইকারি বিক্রেতা বলেন, এখনো বিক্রি শুরু হয়নি। লোকজন এসে ঘুরে ঘুরে দেখছেন।