যৌতুকের বলি দুই গৃহবধূ

পাবনা সদর উপজেলায় গতকাল সোমবার রেখা খাতুন (২৩) নামের এক গৃহবধূর লাশ তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রেখার পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য রেখার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে হত্যা করেছেন। ঘটনার পর থেকে রেখার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় গত শুক্রবার রাতে সাহারা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ তাঁদের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যৌতুকের দাবিতে সাহারাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাঁর ভাই আবদুস সালাম স্বামী জহুরুল ইসলাম, শ্বশুর আবু বক্কার ও শাশুড়ি জহুরার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে গতকাল সোমবার পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

রেখার পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের রিপন হোসেনের সঙ্গে মাদারিপুর সদর উপজেলার বামন্দি গ্রামের ফারুক হাওলাদারের মেয়ে রেখার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় রেখার পরিবার রিপনকে এক লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয় এবং বাকি টাকা পরে দেওয়া হবে বলে রিপনকে জানানো হয়। কিন্তু যৌতুকের ওই অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় প্রায়ই স্বামী রিপনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেখার ওপর নির্যাতন চালাতেন। গতকাল সকালে শ্বশুরবাড়ির একটি কক্ষে রেখার লাশ পাওয়া যায়।

রেখার ভাই ইমন হাওলাদার অভিযোগ করেন, যৌতুকের টাকার জন্য পরিকল্পিতভাবে তাঁর বোনকে হত্যা করা হয়েছে।

গতকাল বিকেলে পাবনা সদর থানার ওসি কাজি হানিফুল ইসলাম বলেন, লাশের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

পুলিশ ও নিহত সাহারার পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় এক যুগ আগে গুরুদাসপুরের চাপিলা ইউনিয়নের তেলকুপি গ্রামের উমেদ সরকারের মেয়ে সাহারা খাতুনের সঙ্গে জহুরুলের বিয়ে হয়। জহুরুল গত শুক্রবার সকালে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট করেন। ওই দিনই রাতে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘরের আড়ের সঙ্গে ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায় সাহারার লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের ভাই সালাম জানান, বিয়ের সময় জহুরুলকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। তার পরও তাঁর বোনের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। তাঁদের সুখের কথা ভেবে পরে জহুরুলকে আরও ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেন, জহুরুলই তাঁর বোনকে হত্যা করেছে।

গুরুদাসপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, সাহারার গলায় আঙুলের ছাপসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।