মমতার কাছে ১৮০ 'বাংলাদেশি জঙ্গি'র তালিকা হস্তান্তর

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকা ‘১৮০ বাংলাদেিশ জঙ্গি’র তালিকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। গতকাল সোমবার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে ডোভাল এই তালিকা দেন। ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস গতকাল এ খবর প্রকাশ করেছে। 
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছর জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) কীভাবে পশ্চিমবঙ্গকে তাদের ‘নিরাপদ স্বর্গ’ হিসেবে গড়ে তুলেছে, মমতার সঙ্গে বৈঠকে ডোভাল ও ভারতের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা সেই বর্ণনা দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এক সূত্র জানায়, এ সময় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পশ্চিমবঙ্গের অনিবন্ধিত মাদ্রাসার তালিকা তুলে দেওয়া হয়। এসব মাদ্রাসাকে ‘জঙ্গি তৈরির আস্তানা’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা জলপাইগুড়ি জঙ্গি তৈরির একটা বড় ঘাঁটি, এমনটাই ডোভাল জানান মুখ্যমন্ত্রীকে।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসেন অজিত ডোভাল।
প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি জানান, রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে গতকাল সকালে কলকাতায় পৌঁছে ডোভাল সোজা চলে যান বর্ধমানের বিস্ফোরণস্থল খাগড়াগড়ে। এরপর তিনি রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনএসজি) মহাপরিচালক জয়ন্ত নারায়ণ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) মহাপরিচালক শরদ কুমার, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাপ্রধান (আইবি) আসিফ ইব্রাহিম, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সচিব প্রকাশ মিশ্র প্রমুখ।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে ডোভাল বা অন্য তিনটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কোনো কর্মকর্তা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি।
বৈঠক শেষে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সচিব প্রকাশ মিশ্র সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, বর্ধমান বিস্ফোরণ ও রাজ্যের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনা তদন্তে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কেন্দ্র এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তাই সন্ত্রাস মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে কাজ করবে।
২ অক্টোবর বর্ধমান শহরের তিন কিলোমিটার দূরে খাগড়াগড়ে এক বিস্ফোরণে মারা যান দুজন। এঁরা হলেন শাকিল আহমেদ ওরফে শাকিল গাজী ও সুবহান মণ্ডল। আহত হন আবদুল হাকিম নামে আরও একজন। পুলিশের দাবি, নিহত দুই ব্যক্তি জেএমবির সদস্য।