যৌন হয়রানির বিচার না পেয়ে চেয়ারম্যানের দপ্তরে তালা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তোলা যৌন হয়রানির অভিযোগের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও বিচার না করায় আজ মঙ্গলবার চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিভাগের ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, গত ১৪ মে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন ওই বিভাগের এক শিক্ষক। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। তবে পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে আজ বেলা একটার দিকে চেয়ারম্যানের দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিভাগের চেয়ারম্যান দীপিকা রানী সরকারসহ চার শিক্ষক ভেতরে আটকা পড়েন। পরিস্থিতি শান্ত হলে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তালা খুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নূর মোহাম্মদ।

ওই ছাত্রী শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে ওই অভিযোগপত্রে বলেন, ‘প্রায় এক বছর ধরে আমাকে মানসিকভাবে হয়রানি করছেন শিক্ষক...। প্রতিদিন রাতে মুঠোফোনে কল ও বিভিন্ন অশ্লীল খুদে বার্তা পাঠাতেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর সঙ্গে বেড়াতে যেতে ও একটি অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় একদিন ল্যাব ক্লাসে “অসভ্যের মতো” আচরণ করেছেন তিনি।’

হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ তুলে নিতে একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন ওই শিক্ষক। কিন্তু বিষয়টি বিভাগের চেয়ারম্যানকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান দীপিকা রানী সরকার। অভিযোগ ওঠা ওই শিক্ষককে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান হেলেনা ফেরদৌসীকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী এক বছর ওই শিক্ষককে পদোন্নতি ও ওই ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা নিতে দেওয়া হবে না।