তিন লাখ গ্রাহক নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছে

ছবি: ফোকাস বাংলা
ছবি: ফোকাস বাংলা

দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার আরও তিন লাখ গ্রাহককে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। এ জন্য এক হাজার ৮১ কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন নির্মাণ এবং ৭৭৭ কিলোমিটার বিদ্যমান লাইন পুনর্বাসন করা হবে। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন হবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক এ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ সভা হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৩২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে কোনো বিদেশি সহায়তা নেওয়া হবে না। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ৪৪ উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা জেলার সদর উপজেলার পাশাপাশি বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, মনপুরা, নলসিটি, কাঁঠালিয়া, ভান্ডারিয়া, শৈলকুপা, মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ, আলমডাঙ্গা, ভেড়ামারা, কুমারখালী, মংলা, ফুলতলা, মধুখালী, সদরপুর, ভাঙ্গা, পাংশা ও গোয়ালন্দ উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ওই অঞ্চলের তিন লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পাবেন। এতে অতিরিক্ত ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। এ প্রকল্পের আওতায় দুই হাজার ১০০টি ট্রান্সফরমার কেনা হবে। তিনটি নতুন ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি ১১টি পুরোনো ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র পুনর্বাসন করা হবে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে ওজোপাডিকো এলাকাভুক্ত ২১টি জেলা শহর ও ২০টি উপজেলা সদরের সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১২ হাজার ৭৯০ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করতে হবে। এখন পর্যন্ত নয় হাজার ৯৭০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মিত হয়েছে। নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর আরও ৪৬৬ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণের প্রয়োজন হবে।
একনেকের সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির চাকা যত ঘুরবে, বিদ্যুতের চাহিদা ততই বেড়ে যাবে। এটাই স্বাভাবিক। আমরা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সব সময়ই সর্বাত্মক কাজ করে যাব। আমাদের লক্ষ্য হলো, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া।’
একনেক সভা সূত্রে জানা গেছে, সভার শুরুতে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ভালো করেছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক যখন বলছে, বাংলাদেশ কিছুটা পারে। তার মানে, ভালোই এডিপি বাস্তবায়ন করতে পারে বাংলাদেশ। এ সময় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, হাতের চুড়ি দেখার জন্য আয়না লাগে না। দেশের লোকজনই বুঝবে দেশ কতটা এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য বিশ্বব্যাংকের সার্টিফিকেট লাগবে না।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মোট এক হাজার ৫৩৫ কোটি টাকার পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। বরাদ্দের মধ্যে সরকারি খাত থেকে এক হাজার ৪৯১ কোটি টাকা এবং বাকি ৪৪ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব খাত থেকে দেওয়া হবে।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো

৫৩ কোটি টাকার রাজশাহী বিসিক শিল্পনগর সম্প্রসারণ প্রকল্প, ৪০৬ কোটি টাকার কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প, ১৩৪ কোটি টাকার ভোলার লালমোহন উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ অংশে নদীর তীর সংরক্ষণ (দ্বিতীয় পর্যায়), (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প এবং ১১০ কোটি টাকার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প।
সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।