নিজামীকে মন্ত্রী করা ছিল মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের গালে চড়

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীকে বাংলাদেশের মন্ত্রী করাটা ছিল মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের গালে চড দেওয়ার শামিল। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ আজ বুধবার নিজামীর মামলায় রায় ঘোষণার সময় দেওয়া পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেন।

পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল বলেন, নিজামী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১১ থেকে ১৪ নম্বর অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে উসকানির যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, একাত্তরের ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউটে ইসলামী ছাত্রসংঘের সভায় পাকিস্তানকে ‘আল্লাহর ঘর’ বলেন। স্পষ্টতই তিনি এবং তাঁর দল জামায়াতে ইসলামী ইসলামের মূল কথার বিকৃতি ঘটিয়ে রাজনীতিতে ব্যবহার করেছেন।

আলবদর বাহিনী সম্পর্কে ট্রাইব্যুনাল বলেন, নিজামী শুধু আলবদর বাহিনীর প্রধানই ছিলেন না, এটি গঠনের ক্ষেত্রেও মূল হোতা ছিলেন। এ ছাড়া ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি নিখিল পাকিস্তান ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন, যা বর্তমানে ছাত্রশিবির নামে পরিচিত। আলবদর বাহিনী ছিল ছাত্রসংঘের ‘অ্যাকশন সেকশন’। স্পষ্টতই ছাত্রসংঘ ও আলবদরের ওপরে নিজামীর দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ ছিল।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, নিজামী মনপ্রাণ দিয়ে শুধু বাংলাদেশের বিরোধিতাই করেননি, তিনি পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরী, আজহারুল হক ও হুমায়ূন কবিরের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা সাক্ষ্যের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। অথচ এই নিজামীকেই বাংলাদেশের মন্ত্রী করা হয়েছিল, যা ছিল বড় ধরনের ভুল এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের গালে কষে চড়।