ঠেকবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ কুমিল্লাবাসী

ঈদকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা নগরে ছিনতাই ও ঠেকবাজি বেড়েছে। নগরের ১৩টি এলাকায় প্রতিনিয়ত ঠেকবাজদের খপ্পরে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। এতে সর্বস্ব হারিয়ে জনমনে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও হতাশা দেখা দিয়েছে। নগরে ৭৪ জন ঠেকবাজ ওই কাজ করছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগরের ধর্মসাগরের দক্ষিণ পাড় ফয়জুন্নেছা স্কুলের মোড়, ফরিদা বিদ্যায়তনের পূর্বপাশের গলি, কুমিল্লা মর্ডান হাইস্কুল এলাকা, বিসিক শিল্পনগর মোড়, রানীরবাজার পশ্চিম মোড়, অশোকতলা মোড়, ধর্মপুর মোড়, বাগিচাগাঁও মোড়, টমছমব্রিজ, নবাব বাড়ি চৌমুহনী, ছোটরা ডিসি সড়ক, পৌর পার্কের পূর্ব দিকের সড়ক ও আদালত এলাকায় ছিনতাই এবং ঠেকবাজি বেড়েছে।

এসব এলাকায় রাত ১০টা থেকে একটার মধ্যেই ওই ঠেকবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি হয়ে থাকে। রোজার মাসে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অর্ধশতাধিক ছিনতাই ও ঠেকবাজির ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় রাতের বেলায় চলাচলরত ব্যক্তিরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

কুমিল্লা ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মাহাবুব আলম বাবু বলেন, ‘রাতে ক্লাব থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোড়ে মোড়ে ঠেকবাজদের দেখা মেলে। রোজার শুরু থেকেই এদের উৎপাত বেড়ে গেছে। ধর্মসাগরের দক্ষিণ পাড় এলাকা থেকে সম্প্রতি ক্লাবের দুই কর্মচারীর চার হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। এ অবস্থায় ক্লাবের নিজস্ব রিকশায় বাড়ি ফেরার পথে রড ও লাঠি সঙ্গে রাখি। ঠেকবাজদের ভয়ে কয়েকজনকে নিয়ে বাসায় ফিরতে হয়।’

লালমাই ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন জনি বলেন, ‘গত ১৭ জুলাই রাত ১০টায় নগরের ঠাকুরপাড়া বিসিক এলাকায় মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে আমার মোটরসাইকেল ও ছয়টি মুঠোফোন সেট নিয়ে যায় ঠেকবাজরা।’

কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ মিয়া জানান, ১ আগস্ট দুপুরে জনতা ব্যাংক কান্দিরপাড় শাখা থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে এক গ্রাহক গন্তব্যে রওনা হন। ওই সময় চারজনের একটি চক্র কান্দিরপাড় এলাকায় ঠেক দিয়ে ওই টাকা ছিনতাই করে। একপর্যায়ে একজনকে জনতা আটক করে। পরে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহসীন খান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে কিছুটা ঠেকবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। গরিব পরিবারের সন্তান থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানেরাও ওই কাজে জড়িয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ১৩টি স্থানে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। নগরের ১৮টি ওয়ার্ডের ৭৪ জন ঠেকবাজ ওই কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে ডিবির পাঁচটি দল মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে টহল দিচ্ছে।’