ভারপ্রাপ্ত প্রধান দিয়েই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদটি দীর্ঘ চার বছর ধরে শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষক আকলিমা খাতুন।

শিক্ষক-সংকট থাকা এ বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষকের জায়গায় কর্মরত আছেন মাত্র তিনজন। একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। বাকি দুজন শিক্ষককে ২৮০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান করাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে করে পাঠদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

একইভাবে কোটচাঁদপুর উপজেলার শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষক খায়রুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এ কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বংকিরা ও শ্রীরামপুরের মতো ঝিনাইদহ জেলায় বর্তমানে ৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে বছরের পর বছর সহকারী শিক্ষকেরা ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক বিদ্যালয়ে আবার সহকারী শিক্ষকও নেই।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলায় ৪০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৫১টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। এর মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ছয়টি, কালীগঞ্জ উপজেলায় আটটি, মহেশপুর উপজেলায় ১৫টি, শৈলকুপা উপজেলায় ১৫টি, হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় ছয়টি ও কোটচাঁদপুর উপজেলায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই।

সদর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতি মাসে মাসিক সভা ছাড়াও নানা কাজে তাঁকে কমপক্ষে পাঁচ দিন উপজেলা কার্যালয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ থাকে। এসব নিয়েই প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ব্যস্ত থাকতে হয়।

অপর এক প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, অনেকের প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নেই। এ রকম লোককে দায়িত্ব দিলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ কুমার ভৌমিক জানান, ঝিনাইদহে সম্প্রতি ২২ জনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন যোগদান করেননি। এখন যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নেই, সেগুলো পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।