ক্রেন উল্টে ভোগান্তি

বিশাল আকৃতির একটি বিলবোর্ড অপসারণের সময় ক্রেন উল্টে চট্টগ্রামের কাস্টমস, বন্দরসহ আশপাশের এলাকায় যানজটে ভোগান্তিতে পোহাতে হয়েছে মানুষকে।
অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিয়মিত অভিযান পরিচালনার সময় গতকাল বুধবার বেলা দেড়টার দিকে কাস্টমস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ক্রেনের ভেতরে থাকা চালক আবু তাহের সামান্য আহত হন। দুর্ঘটনার পর উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ক্রেনটি সরিয়ে নেওয়া হলে ধীরে ধীরে ওই এলাকার যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বিমানবন্দর সড়কের কাস্টমস মোড়ের পূর্ব পাশে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সীমানাপ্রাচীরের পাশে ফুটপাতে থাকা বিশাল আকৃতির একটি বিলবোর্ড অপসারণের জন্য দুটি ক্রেন ব্যবহার করা হচ্ছিল। হঠাৎ একটি ক্রেনের বেল্ট ছিঁড়ে যায় এবং অন্য ক্রেনটি উল্টে যায়। এ সময় চার লেনের ওই সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ সড়কের এক পাশ দিয়েই দুই দিকের গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছিয়া খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পর যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় অভিযান স্থগিত করা হয়।
দুর্ঘটনার পর নগরের আগ্রাবাদ থেকে ইপিজেড মোড় পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ইপিজেড মোড়ে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পৌনে ছয়টা থেকে ইপিজেড মোড়ে গাড়িতে বসে আছি। কখন এই জ্যাম ছাড়বে, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের ওপর থেকে ক্রেন সরিয়ে নিতে এত সময় লাগায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীদের অনেকেই।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমে একটি উদ্ধারকারী যান নিয়ে আসা হলেও তা দিয়ে অত্যন্ত ভারী ক্রেনটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য আরেকটি উদ্ধারকারী যান আনা হয়। তিনি বলেন, যানজটের কারণে দ্বিতীয় উদ্ধারকারী যানটি ঘটনাস্থলে পৌঁছতে কিছুটা সময় লাগে। এ ছাড়া ক্রেনটির বিভিন্ন অংশ আলাদা করে সরাতে হয়েছে। এসব কারণে ক্রেনটি সরাতে অনেক সময় লেগে যায়।
দুর্ঘটনার আগে গতকালের অভিযানে তিনটি বিলবোর্ড অপসারণ ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে চিটাগাং আউটডোর অ্যাডভারটাইজিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা গতকাল সকালে করপোরেশনের মেয়র মন্জুর আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাঁরা মেয়রকে অবৈধ তালিকা অনুযায়ী বিলবোর্ড উচ্ছেদ করার অনুরোধ জানান।
সংগঠনের সভাপতি ফরিদ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ নিয়ে বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি হচ্ছে। নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে বৈধ বিলবোর্ডও উচ্ছেদ করা হচ্ছে। যদি নীতিমালাবহির্ভূত কোনো বিলবোর্ড থাকে, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে তা সংশোধনের জন্য মেয়রকে অনুরোধ করা হয়েছে।