পুলিশের সোর্স হত্যার দায়ে জেএমবির দুই সদস্যের মৃত্যুদণ্ড

টাঙ্গাইলে পুলিশের তথ্যদাতা (সোর্স) জয়নাল আবেদীনকে হত্যার দায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দুই সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এ দুই জঙ্গি হলেন সাইফুল ইসলাম ও আবদুর রহমান।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক গতকাল বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার আগে এই দুই আসামিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণে ১৬ জন সাক্ষীকে উপস্থাপন করেছে। আদালত রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়ে শোনান।
রায়ে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয় রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রায়ে আরও বলা হয়, হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে ফাঁসির আদেশ কার্যকর হবে। আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানার রাবনা বাইপাস চেকপোস্টে ঢাকাগামী একটি বাসে তল্লাশি করার সময় জেএমবির সদস্য সাইফুল ইসলাম ও আবদুর রহমান পুলিশকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি করেন। এতে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল সিরাজ মিয়া ও পুলিশের সোর্স জয়নাল আবেদীন গুলিবিদ্ধ হন। ওই দুই জঙ্গির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। তাঁরা নিজেদের জেএমবির সদস্য বলে পরিচয় দেন। গুলিবিদ্ধ জয়নাল পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যার চেষ্টা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। জয়নালের মৃত্যুর পর এই মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (হত্যা) সংযোজন করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুলাই সাইফুল ও আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক শঙ্কর চন্দ্র।
জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি ২০১২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল আদালত থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন তাছলিমা ইয়াসমিন। আসামিপক্ষে ছিলেন ফারুক আহম্মদ। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ফারুক আহম্মদ বলেন, এ রায়ে আসামিপক্ষ ন্যায়বিচার পায়নি। ঘটনার সময় আসামিরা নাবালক ছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।