সোনারগাঁয়ে মাটি লুটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা এলাকায় মেঘনা নদীর তীরের ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে ১০ গ্রামের মানুষ। তারা গতকাল শুক্রবার ওই নদীর তীরে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সভা করেছে।
আন্দোলনকারীরা তিন দিনের মধ্যে মাটি কাটা বন্ধ এবং এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করলে আমরণ অনশন এবং মেঘনা নদীতে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
‘আলোকিত ১০ গ্রাম’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে গতকাল সকাল ১০টায় শম্ভুপুরা ইউনিয়নের ফতেপুর, দড়িগাঁও, শম্ভুপুরা, ইসলামপুর, ফরদী, এলাহীনগর, বানিয়ারচর, গোবিন্দপুর ও চেলার চরসহ ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে নদীর তীরে সমবেত হয়ে মানববন্ধন করে। পরে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেওয়া অনেক কৃষক কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই সময় শম্ভুপুরা গ্রামের কৃষক নুরুজ্জামান প্রধান বলেন, ‘বাপ-দাদার আমলের আমাগো খেতের মাটি কাইট্টা নিতাছে। বাবা, আমাগো পক্ষে কেউ নাই।’
শম্ভুপুরা গ্রামের খৈয়াম হোসেন, নুর হোসেন ও নিজাম উদ্দিন জানান, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার জাতীয় পার্টির সমর্থক ও চাঁদনী ট্রেডার্সের মালিক চাঁন মিয়া মেঘনা নদী থেকে বালু তোলার ইজারা এনে অবৈধভাবে ১০ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষকের ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
‘আলোকিত ১০ গ্রাম’-এর সদস্যসচিব শামসুল আলম জানান, দলমত-নির্বিশেষে বিভিন্ন পেশার মানুষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করার পর সন্ত্রাসীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর প্রায় দুই মাস কৃষকদের জমির মাটি কেটে নেওয়া বন্ধ ছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে শতাধিক সন্ত্রাসী আবারও মাটি কাটা শুরু করেছে।
ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, গত এক সপ্তাহে সন্ত্রাসীরা ৬০ বিঘা জমির মাটি কেটে নিয়ে গেছে।
চাঁদনী ট্রেডার্সের মালিক চাঁন মিয়া বলেন, ‘আমি বালুমহালের ইজারা এনে ব্যবসা করছি। কৃষকদের জমির মাটি কাটার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা জানান, কৃষকদের ফসলি জমির মাটি অবৈধভাবে কেটে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।