দুই বোনের সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

অমরজিতা চাকমা ও নন্দিতা চাকমা দুই বোন। অমরজিতা বান্দরবান টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণীর ও নন্দিতা তাইন্দং উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। তাদের বাড়ি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সর্বেশ্বরপাড়ায়। এতিম এই দুই বোনের শেষ সম্বল বাড়িটি ৩ আগস্টের হামলার সময় পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

নাবালিকা হিসেবে অমরজিতা ও নন্দিতা আছে তাদের জেঠার আশ্রয়ে। সেদিনের সহিংসতায় পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাদের জেঠার বাড়িও। অমরজিতা ও নন্দিতার সামনে এখন অনিশ্চিত এক ভবিষ্যৎ।

১০ আগস্ট সরেজমিনে দেখা যায়, সর্বেশ্বরপাড়ায় আগুনে পুড়ে যাওয়া অনেক ঘরবাড়ির ধ্বংসাবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। পুড়ে যাওয়া বাড়ির মধ্যে অমরজিতা ও নন্দিতার বাড়িও রয়েছে। তাদের জেঠা সর্বেশ্বরপাড়ার কার্বারি (গ্রামপ্রধান) তনয় শশী চাকমার বাড়িরও একই অবস্থা।

নন্দিতা চাকমা বলল, ‘হামলাকারীরা যখন আমাদের গ্রামে হামলার উদ্দেশ্যে আসছিল তখন আমি এক পোশাকে অন্যদের সঙ্গে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নিই। সেখান থেকে ফিরে দেখি আমাদের ও জেঠার বাড়িসহ অনেকের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার বইপত্র ও পোশাকসহ ঘরের সবকিছুই পুড়ে গেছে।’ নন্দিতা জানায়, তাদের বাবা লাল মোহন চাকমা চলতি বছরের মার্চে রোগে ভুগে মারা যান। তার তিন বছর আগে তাদের প্রিয় মা জুনা দেবী চাকমাও অসুখে মারা যান। এরপর থেকে তারা জেঠা তনয় শশী চাকমার আশ্রয়ে রয়েছে।

তনয় শশী চাকমা (৬৮) তাঁর আশ্রয়ে থাকা দুই ভাতিজির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার দুই মেয়ের দায়িত্ব আমি নিয়েছিলাম। তাদের সব সহায়-সম্পত্তি আমার হেফাজতে ছিল। কিন্তু শনিবারের হামলায় সবই শেষ হয়ে গেল। দুই ভাতিজির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত।’

অভিযোগ রয়েছে, ৩ আগস্ট এক মোটরসাইকেল চালকের কথিত অপহরণের পর ক্ষুব্ধ বাঙালিরা চারটি আদিবাসী গ্রামের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।