'স্বউদ্যোগ যাত্রীছাউনি'

যানবাহনের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াতে পারলেও বসার জায়গা ছিল না। একটি যাত্রীছাউনির অভাবে প্রখর রোদে পুড়তে হতো; ভিজতে হতো বৃষ্টিতে। একটি যাত্রীছাউনি নির্মাণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের কোলাদি গ্রামের লোকজন। দীর্ঘদিনের ওই দাবি পূরণ করেছেন গ্রামের ২০ উদ্যমী তরুণ। এবারের ঈদের ছুটিতে তাঁরা প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করেছেন সুন্দর ও ছিমছাম একটি যাত্রীছাউনি। নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বউদ্যোগ যাত্রীছাউনি’। গত মঙ্গলবার গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি ও চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাহার আলী মোল্লা আরও দুজন প্রবীণ ব্যক্তিকে নিয়ে ছাউনির উদ্বোধন করেন।

উদ্যোগী ওই তরুণেরা হলেন কোলাদি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম খান, সাঈদ কুতুব, গোলাম আযম খান, লুৎফর রহমান শেখ, শফিউর রহমান খান, রবিউল করিম, আবু তালেব প্রামানিক, নজরুল ইসলাম খান, বেলাল হোসেন মোল্লা, জাকির হোসেন মোল্লা, নজরুল ইসলাম মোল্লা, মকবুল হোসেন মোল্লা, মোতাহার হোসেন, আবদুস সোবহান খান, সিরাজ শেখ, ইকবাল শেখ, শফিউল করিম, আবদুস সাত্তার খান, আফতাব আলী প্রামানিক ও আবদুর রাজ্জাক বিশ্বাস। এঁরা সবাই একসঙ্গে গ্রামের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে পেশাগত কারণে গ্রামের বাইরে থাকেন। তবে ঈদসহ বিভিন্ন ছুটিতে গ্রামে আসেন।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, পাবনা-সুজানগর সড়কের বড় বটতলা এলাকা। গ্রামের পিচঢালা পথ এসে মিশেছে এখানে। দুটি সড়কের মিলনস্থলেই তৈরি করা হয়েছে ‘স্বউদ্যোগ যাত্রীছাউনি’। উদ্যোক্তাদের একজন কোলাদি গ্রামের শফিউর রহমান খান বলেন, ‘আমরা এই গ্রামে বেড়ে উঠেছি। গ্রামের আলো-বাতাস, মাটি ও মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই এবার ঈদের ছুটিতে গ্রামে এসে ছাউনি নির্মাণ করি। এতে গ্রামবাসী খুশি, আমরাও খুশি।’

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাহার আলী মোল্লা বলেন, ‘একটি উন্নয়নশীল দেশে সরকারের একার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব নয়। তাই স্বউদ্যোগে দেশে কিছু কাজ হওয়া দরকার। আমাদের গ্রামের ছেলেরা যা করেছে, কাজটি ছোট হলেও অনুকরণীয়। এভাবে দেশের সামর্থ্যবান লোকজন যদি নিজেদের গ্রামের উন্নয়নে এগিয়ে আসেন, তাহলে সত্যিই দেশটা একদিন পাল্টে যাবে।