ইটভাটায় ড্রাম চিমনি পুড়ছে কাঠ

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাত্যাপাড়ার একটি ইটভাটায় নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই ইটভাটাটির।
ইটভাটাটির মালিকের বিরুদ্ধে ১১ জন শ্রমিককে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাত্যাপাড়ায় লোকালয়ের ৩০০-৩৫০ গজের মধ্যে ইটভাটাটি স্থাপন করা হয়েছে। আইন অমান্য করে সেখানে কয়লার বদলে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।
আইন অনুযায়ী, ড্রাম চিমনির বদলে জিগজ্যাগ ও উন্নত প্রযুক্তির চিমনি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু ইটভাটাটিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রাম চিমনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১১ সালে ১১ জন শ্রমিককে শিকল দিয়ে বেঁধে কাজ আদায় করার অভিযোগ ছিল ইটভাটাটির মালিকের বিরুদ্ধে। পরে ওই ১১ শ্রমিককে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর ইটভাটার শ্রমিক মো. মুশিউর রহমান মালিক মো. শাহজাহান ও দারোয়ান মো. ইসমাইল হোসেনকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর ইটভাটাটি বন্ধ থাকে এক বছর। ২০১৩ সালে ইটভাটাটি পুরোদমে চালু করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইটভাটার দক্ষিণে কাপ্তাই লেকের অংশ ও পশ্চিমে পাহাড়ি বন। এসব বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইটভাটা ও ড্রাম চিমনির আশপাশে কাঠের স্তূপ দেখা গেছে। ইটভাটার কোথাও কয়লা দেখা যায়নি।
ইটভাটার ব্যবস্থাপক মিন্টু চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, শিকল দিয়ে শ্রমিক বেঁধে রাখার অভিযোগে মালিকের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, আগামী বছর জিগজ্যাগ চিমনি করা হবে।
ইটভাটার মালিক মো. শাহজাহান বলেন, ‘এখানে ইটের চাহিদা কম। নিয়ম নেমে ইটভাটা চালাতে গেলে আমাদের লাভ হবে না।’ তিনি জানান, ইটভাটার লাইসেন্সের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো লাইসেন্স পাননি। এ ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন না থাকার কথাও তিনি স্বীকার করেন।
লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, শিকল দিয়ে শ্রমিক বেঁধে রাখার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা এখন জামিনে আছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাঈদ-উর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সদর ইউনিয়নের কোথায় ইটভাটা আমি জানি না। অবৈধ হলে ইটভাটাটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’