বাঁশের সাঁকোয় সেতু পারাপার!

সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার শেষ প্রান্তের দুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানের এই সেতুটি ২০১২ সালের বন্যার পর আর মেরামত করা হয়নি। মূল সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো বানিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় এলাকাবাসীকে  ছবি: প্রথম আলো
সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার শেষ প্রান্তের দুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানের এই সেতুটি ২০১২ সালের বন্যার পর আর মেরামত করা হয়নি। মূল সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো বানিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় এলাকাবাসীকে ছবি: প্রথম আলো

নিচে সেতু, ওপরে বাঁশের সাঁকো। এপার-ওপার যাতায়াতে সেতু নয়, ব্যবহূত হচ্ছে শুধু সাঁকো। সেতুটি সিলেটের গোলাপগঞ্জ সীমান্তবর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলার ফুলমলিক গ্রামের বড় খালের ওপর অবস্থিত। এক বছর আগে সেতুটি দেবে যায়। বেকায়দায় পড়ে যায় দুই উপজেলার অন্তত চারটি গ্রামের লোকজন। বন্ধ হয়ে যায় অটোরিকশাসহ যানবাহন চলাচল। উপায় না পেয়ে এলাকাবাসী পারাপারের জন্য সেতুর ওপর সাঁকো নির্মাণ করে।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, সেতুটি প্রায় ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬০ ফুট প্রস্থের। ২০০৬ সালে সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পরপরই বিয়ানীবাজারের আলীনগর ইউনিয়নের বড় খালের ওপর সেতুটির কাজও শেষ হয়। ওই বছর থেকে সড়ক দিয়ে চলাচল শুরু হয়। গোলাপগঞ্জের চন্দগ্রাম-দুধাইর পাতন সড়কের সঙ্গে এই সেতুর মাধ্যমে বিয়ানীবাজার উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়। কিন্তু ২০১২ সালে বন্যার পর আগস্ট মাসে সেতুটি দেবে গিয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।স্থানীয় লোকজন বলছেন, নির্মাণকাজের ত্রুটির কারণে সেতু দেবে গেছে। তবে এলজিইডির একজন উপসহকারী প্রকৌশলী (মাঠ) বলেন, সেতুর পাশে একটি বড় গর্ত করে মাটি তুলে নেওয়ায় বন্যার পানির তোড়ে সেতুটি দেবে যায়। এ অবস্থায় সেতু পারাপারে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির কথা জানিয়ে ফুলমলিক গ্রামের হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পুল (সেতু) ভাঙ্গার পর থাকি বড় কষ্ট করি বাজারও আওয়া-যাওয়া করি। হুরুতাইনতর (ছোটদের) স্কুল পাঠইলে চিন্তাত থাকি, আখতানি পানি পড়ি যায়।’

 আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুন জানান, সেতু মেরামত না হওয়ায় দুই উপজেলার মানুষই দুর্ভোগের শিকার। এক বছরেও এ ভোগান্তির শেষ না হওয়ায় স্থানীয় সাংসদ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ও এলজিইডির প্রকৌশলীরা পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু সেতু সংস্কার বা নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় মানুষ ক্ষুব্ধ।

যোগাযোগ করা হলে এলজিইডির বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী ওমেন্দ্র হোম ভাস্কর চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, আশপাশের গ্রামের কিছু লোক শুকনো মৌসুমে সেতুর পাশে গর্ত করে মাটি তুলে নিয়েছিল। বন্যায় সময় সেখানে পানির তোড় সৃষ্টি হয়। ওই সময় সেতুটি দেবে যায়।

সেতুটি মেরামত করে আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব নয় জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, ‘আমরা ওই জায়গায় নতুন একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। নকশা তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে আশা করি, আগামী শীত মৌসুমে নতুন সেতুর কাজ শুরু হবে।