নোয়াখালীতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

নোয়াখালীর কবিরহাটের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আবুল হাসেম (৪৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আলম ভূঁইয়া ওরফে পারভেজসহ আটজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
গত সোমবার রাতে নিহত আবুল হাসেমের ছেলে মো. বাবলু বাদী হয়ে কবিরহাট থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় হামলার ঘটনায় সরাসরি অভিযুক্ত সাতজন এবং পরে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়েছে।
জানতে চাইলে মামলা দায়ের হওয়ার কথা নিশ্চিত করেন কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুল আলম।
গতকাল মঙ্গলবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একজন নিরীহ কৃষকের হত্যার ঘটনা চেয়ারম্যান ধামাচাপা দেওয়ার জন্য যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছিলেন, তা আইনের দৃষ্টিতে চরম অন্যায়। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
নিহত কৃষক আবুল হাসেম ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের আবদুল হকের ছেলে। তাঁর বড় ছেলে বাবলু জানান, ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করা নিয়ে শনিবার রাতে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে একই এলাকার আবুল কালাম ও সাহাব উদ্দিন লোকজন নিয়ে প্রথমে তাঁর বাবাকে ও তাঁকে মারধর করেন। রোববার বিকেলে তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিজের লোকজন দিয়ে তাঁর বাবাকে ‘হার্টের রোগী’ হিসেবে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে রাত সাড়ে আটটায় তিনি মারা যান। এরপর তিনি টাকার জন্য শহরে গেলে এই সুযোগে চেয়ারম্যান লোকজন দিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাসপাতাল থেকে কৌশলে লাশ নিয়ে আসেন।
বাবলু অভিযোগ করেন, কিছুদূর যাওয়ার পর চেয়ারম্যানও লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে উঠেন এবং যাওয়ার পথে তাঁকে এলাকায় গিয়ে হার্টের অসুখে তাঁর বাবা মারা গেছে বলতে বলেন। এ সময় চেয়ারম্যান তাঁকে তাঁর বাবার ওপর হামলাকারীদের কাছ থেকে তিন-চার লাখ টাকা নিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন এবং এলাকায় গিয়ে সালিসি বৈঠকেরও আয়োজন করেন। পরে পুলিশ যাওয়ায় সালিসি বৈঠক হয়নি।
তবে চেয়ারম্যান নুরুল আলম ভূঁইয়া হত্যার ঘটনা ধামাপাচা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আবুল হাসেম মারামারির ঘটনায় মারা যাননি, মারা গেছেন হার্টের রোগে। লাশ বাড়িতে নেওয়ার সময় এলাকার লোক হওয়ায় তিনি অ্যাম্বুলেন্সে উঠেছিলেন।