গাংনীতে যুবলীগের হামলায় শৃঙ্খলা কমিটির সভা পণ্ড

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন ও উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন। এতে সভা পণ্ড হয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল আমিন জানান, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় ক্ষমতাসীন দলের মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সাংসদ মকবুল হোসেন, গাংনীর মেয়র (আওয়ামী লীগ-সমর্থিত) আহম্মদ আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (বিএনপি-সমর্থিত) মুরাদ হোসেন, গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম ও বিএনপি-সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ও কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শুরু হয় বেলা ১১টায়। দুপুর একটার দিকে সভার শেষভাগে উপজেলা যুবলীগের নেতাদের নেতৃত্বে শতাধিক যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মী সভাকক্ষে ঢুকে গালাগাল ও হট্টগোল শুরু করেন। তাঁরা অনেককে আক্রমণ করারও চেষ্টা করেন। সভায় বিএনপির নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানরা উপস্থিত কেন—জানতে চেয়ে তাঁরা ইউএনওকে দায়ী করে হুমকি দেন। কৈফিয়ত চেয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করেন। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যা ব পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরও বলেন, ‘অন্য উপজেলায় বৃক্ষায়ণ ও “ডিজিটালাইজ” করার সাফল্য হিসেবে দুদফায় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছি। অথচ আমাকে জামায়াত-বিএনপির লোক বানিয়ে হুমকি দেওয়াসহ অপদস্থ করা হলো।’
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন ও যুগ্ম সম্পাদক মজিরুল ইসলামের নেতৃত্বে যুবলীগের শতাধিক কর্মী উপজেলা চত্বরে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা সভাস্থলে ঢুকে গাংনী সাহারবাটি ইউপির চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ওরফে বাবলুকে জখম করার পরিকল্পনা করেন। অনেক কর্মীর কোমরে ধারালো অস্ত্র ছিল। একটার দিকে তাঁরা সভাকক্ষে ঢুকে হট্টগোল ও হামলা করে সভা পণ্ড করে দেন।
মুরাদ হোসেন বলেন, ‘যে সভায় আওয়ামী লীগের এমপি (সাংসদ), মেয়র ও নেতৃবৃন্দ উপস্থিত—সেখানে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা এভাবে হামলা চালাবে তা কল্পনা করিনি।’ তিনি আরও বলেন, পুলিশ ও র্যা ব ঘটনাস্থলে না গেলে এবং নিরাপত্তা দিয়ে বাড়ি পৌঁছে না দিলে বিএনপি-সমর্থিত অনেক ইউপি চেয়ারম্যানের জীবন যেত।
ওসি বলেন, পুলিশ পৌঁছায় বড় ধরনের নাশকতা বা রক্তাক্ত ঘটনা ঘটেনি। তবে উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সভায় যুবলীগের নেতা-কর্মীদের এমন হামলা ও হট্টগোল করে সরকারি সভা পণ্ড করার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি-সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ও খুনি বাবলু কেন ওই সভায় থাকবে, সেটা জানতে গিয়ে সেখানে একটু কেওয়াজ হয়েছে। আমরা (যুবলীগের নেতা-কর্মী) এমপি মকবুলের কাছেই এর কৈফিয়ত চেয়েছিলাম। এর মধ্যে হয়তো কেউ ইউএনওকে গালিগালাজ করেছে।’