দেশভাগের বেদনা নিয়ে...

ঈদ ও বিজয়া দশমী উদ্যাপিত হচ্ছে একই দিনে। উৎসবমুখর দিনে ছেলেকে বাংলাদেশের সীমান্ত দেখাতে কলকাতা থেকে বাসে চেপেছেন বিভূতি। বিশেষ দিনে সীমান্তে কড়াকড়ি থাকে না। দুই দেশের মানুষ পরস্পরের সঙ্গে মেলার সুযোগ পায়। এই মিলনের দৃশ্য ছেলেকে দেখাতেই এত দূর পথ পাড়ি দেওয়া।
অভিজিৎ সেনের ‘সীমান্ত’ গল্পের শুরু এভাবে। দেশভাগ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পটভূমিতে রচিত এই গল্পটির শ্রুতিরূপ শুনতে শুনতে চোখ ভিজে ওঠে দর্শকের। গত ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাতটায় উচ্চারক আবৃত্তি দলের আয়োজনে দেশভাগ ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় শ্রুতি পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে ‘সীমান্ত’ ছাড়াও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাসংগ্রাম নিয়ে রচিত বেশ কয়েকটি লেখা পাঠ করা হয়।
‘সীমান্ত’ গল্পের শুরু একটি দূরপাল্লার বাসে। বিভূতি ও তাঁর সন্তান খোকার সঙ্গে বাংলাদেশের এক বৃদ্ধ কৃষক দম্পতিও তাঁদের সঙ্গী। ভাড়া দিতে না পারায় সবার কাছে হেনস্তা হচ্ছিলেন তাঁরা। প্রশ্ন করে বিভূতি জানলেন, পাসপোর্ট ছাড়াই সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত গিয়েছিলেন তাঁরা। উদ্দেশ্য সীমান্তের অপর পাশে সংসার পাতা মেয়ে আরতিকে দেখে আসা। একাত্তর সালে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আরতিকে নিজেদের কন্যা হিসেবে মানুষ করেছিলেন তাঁরা। তবে নিজেরা মুসলমান হলেও মেয়েটির ধর্মীয় পরিচয় পরিবর্তন করেননি। মোস্তফা কামাল যাত্রার নির্দেশনায় এই গল্পের শ্রুতিরূপ দেন ফারুক তাহের। আবহ সংগীত রচনা করেন মাঈনুদ্দীন কোহেল।
অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পরিবেশনার নাম ছিল ‘মন ও মানচিত্রের বিভাজন’। মাহমুদ দারবিশ, এডওয়ার্ড সাঈদ ও নোয়াম চমস্কির কিছু লেখা নিয়েই সাজানো হয় পরিবেশনাটি। গ্রন্থনা ও নির্মাণে ছিলেন ফারুক তাহের। আবহ সংগীত করেছেন সাজ্জাদ তপু। ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের চিত্র উঠে আসে এতে।
দুটি শ্রুতি পরিবেশনায় অংশ নেন ফারুক তাহের, সাজ্জাদ তপু, এ এস এম এরফান, মৌসুমী চক্রবর্তী, সাবিহা নুসরাত, মাঈনুদ্দীন রাসেল, শামীমা ইয়াছমিন, সায়মন সফিক, শাহ হোসাইন ও মাশরুবা শারমিন।