সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক যানজট, ভোগান্তি

ছাত্রলীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে ফুটওভারব্রিজ থেকে দুপুরে তোলা ছবি l প্রথম আলো
ছাত্রলীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে ফুটওভারব্রিজ থেকে দুপুরে তোলা ছবি l প্রথম আলো

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংগঠনের অতীত সুনামের ধারা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগকে মানুষের মন জয় করে সুনামের ধারা ফিরিয়ে আনতে হবে। নেতা-কর্মীদের প্রযুক্তি ও আদর্শের সমন্বয়ে কাজ করতে হবে।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক সমাবেশে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আজ রোববার ছাত্রলীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার দিনবদলের সনদকে কাজে লাগাতে হবে। ২০১৫ সাল একই সঙ্গে “চ্যালেঞ্জিং” ও “ডিলাইটফুল” হবে। আমাদের কর্মীদের শুধু পরবর্তী নির্বাচন নয়, মানুষের মন জয় করার জন্য কাজ করতে হবে।’ পদ্মা সেতু সম্পর্কে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এখন অবাস্তব কল্পনা নয়, দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এ সময় তিনি ছন্দ মিলিয়ে বলেন, ‘যদি থাকে শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’
সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম অল্প সময়ের মধ্যে পরবর্তী কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার ঘোষণা দেন। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, আওয়ামী লীগের নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ব্যাপক যানজটে ভোগান্তি: সমাবেশে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপে করে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী যোগ দেন। সমাবেশ শেষে একটি শোভাযাত্রা অপরাজেয় বাংলা থেকে থেকে শাহবাগ, মৎস্য ভবন হয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও বিপুল জনসমাগমের কারণে এ সময় শাহবাগ থেকে পল্টন পর্যন্ত রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
উপায় না দেখে দীর্ঘক্ষণ বাসে থাকার পর অনেক যাত্রী বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন। গাড়ি থেকে নেমে মৎস্য ভবনের সামনে হাঁটছিলেন হোসাইন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হঠাৎ সুপারভাইজার কইল গাড়ি চলব না। সামনে ছাত্রলীগ মিছিল করতাছে। এ জন্য হেঁটেই রওনা দিছি।’
বেলা পৌনে দুইটার দিকে ট্রাফিক বিভাগের নিয়ন্ত্রণকক্ষ মহাখালী থেকে শুরু করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, ফার্মগেট, শাহবাগ, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড়, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও এর আশপাশের এলাকায় যানজটের কথা জানায়। তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, পল্টন, প্রেসক্লাব, মগবাজার, বাংলামোটর, রূপসী বাংলা মোড়, ধানমন্ডি এলাকায় যানবাহনগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
বেলা একটার দিকে শুরু হওয়া ছাত্রলীগের শোভাযাত্রায় বাজতে থাকে গ্যাংনাম স্টাইল, কিক, হুককা বার, নাগিনসহ নানা রকমের হিন্দি গান। তবে কয়েকটি পিকআপে শাফিন আহমেদের জন্মদিন গানটিও বাজানো হয়। এ ছাড়া মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রায় উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো হয়। বেলা দেড়টার দিকে ‘পারভেজ হোসেন, কামরাঙ্গীচর থানা ছাত্রলীগের’ ব্যানার টানানো পিকআপ থেকে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া মেয়েদের উদ্দেশে অশ্লীল ভাষা ও অশালীন ইঙ্গিত করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।