পাঁচ বছরের মাথায় ভবন জরাজীর্ণ, বিক্রির প্রস্তাব

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সাতবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের পাঁচ বছরের মাথায় বিক্রির প্রস্তাব করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্মাণের এক বছর পর থেকেই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ এ প্রস্তাব করেছে বলে জানা গেছে। জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬২ সালে ৪০ শতক জমিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়। তখন তিন কক্ষের একতলা একটি ভবনে পাঠদান শুরু হয়। বিদ্যালয়টিতে ৩২৭ শিক্ষার্থী এবং পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে আরেকটি দুই কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০০৯ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। গত ১২ নভেম্বর বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন বিক্রির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো ভবনের তিন কক্ষে গাদাগাদি করে চলছে পাঠদান। প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা বারান্দায় বসে পাঠ গ্রহণ করছে। নতুন ভবনের দেয়াল থেকে উঠে গেছে পলেস্তারা। মেঝে দেবে গেছে। দুটি কক্ষের মেঝেতে তৈরি হয়েছে গর্ত।
বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে উজানচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত) মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণের সময় অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ঠিকাদার। আমি বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলাম।’
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাছিনা আক্তার বলেন, ‘দুটি ভবন থাকলেও নতুন ভবনে পাঠদান সম্ভব না। জরাজীর্ণ এ ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। তাই দরপত্রের মাধ্যমে ভবনটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ পারভিন বলেন, ‘সাতবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ ভালো না হওয়ায় দ্রুত ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এখানে পাঠদান সম্ভব না। প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতিসহ সভায় রেজ্যুলেশন করে ভবন বিক্রির যথাযথ ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি।’
উপজেলা প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবনটি বিক্রির জন্য প্রাক্কলন করতে আমাকে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে উপজেলা শিক্ষা কমিটি থেকে প্রাক্কলন অনুমোদন করাতে হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’