ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার ৯০ ঘণ্টা পর মামলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদ আল হোসেন ওরফে তুহিনের ওপর হামলার ৯০ ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে মতিহার থানায় মামলাটি করেন হামলাকারীদের গুলিতে আহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শাওন সরকার। মামলার  নম্বর ২২, তারিখ ২৬.০৮.২০১৩। মামলায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবদুস সোবহান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। ওই হামলায় হাতে গুলিবিদ্ধ হন সমাজসেবা সম্পাদক শাওন সরকার। এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে দায়ী করেছে ছাত্রলীগ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। তৌহিদ বর্তমানে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিত্সাধীন।

নগরের মতিহার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এজাহারে বলা হয়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা মোটরসাইকেলে করে নানারকম অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হাতবোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তারপর তাঁরা হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তৌহিদের মাথায় জখম করে এবং ডান হাত ও ডান পায়ের রগ কেটে দেয়। রাত ১০টার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমীর আলী হল প্রাধ্যক্ষের বাসভবনের উত্তর-পশ্চিম কোনায়  হামলা চালায়।

মামলার বাদী শাওন সরকার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল হোসেন হামলাকারীদের চিনতে পেরেছেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।’ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকায় মামলা করতে দেরি হলো বলে জানান শাওন।

তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, ‘মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে মেহেরচণ্ডী এলাকার শিবিরকর্মী মো. মিলনকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে বলে তিনি জানান।

পঙ্গু হাসপাতাল থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ওয়ালিদ আহমেদ প্রথম আলো ডটকমকে জানান, তৌহিদকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাঁর চেতনা ফিরে এলেও খুব বেশি কথা বলতে পারছেন না। বেশির ভাগ সময় ঘুমিয়ে থাকছেন। তাঁর ডান হাত ও ডান পায়ের জখম গুরুতর হওয়ায় এক্স-রে করা হয়েছে। সুস্থ হয়ে উঠতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। সুস্থ হলেও তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাপন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিত্সকেরা। তাঁর মা দেলোয়ারা ইয়াসমিন ও বাবা হোসেন আলী শেখ হাসপাতালে তৌহিদের পাশে রয়েছেন।