চট্টগ্রামে গ্যাস সংযোগ কমেছে

চট্টগ্রামে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস-সংযোগের হার কমে গেছে। কারণ হিসেবে প্রয়োজনীয় মালামালের অভাবকে দায়ী করছে চট্টগ্রামে গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)।
কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের উত্তর ও দক্ষিণ অংশ মিলিয়ে গত তিন মাসে দুই হাজার গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অথচ চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সংযোগ দেওয়া হয়েছিল সাড়ে পাঁচ হাজার। আরও প্রায় ১৮ হাজার গ্রাহক সংযোগের অপেক্ষায় আছেন। এখনো প্রতি মাসে গড়ে পাঁচ শতাধিক সংযোগের আবেদন পড়ছে।
ঠিকাদার ও গ্রাহকেরা বলছেন, সব সময়ই কোনো না কোনো সংযোগ-উপকরণের ঘাটতি লেগে আছে। নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়াল পাওয়ার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে একজন গ্রাহককে গ্যাস-সংযোগ দেওয়ার কথা। অথচ এখন গ্রাহকদের মাসের পর মাস অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
খায়ের আহমেদ নামের একজন গ্রাহক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আট মাস আগে আমি সিরিয়াল পেয়েছি। তখন বলা হয়, খুব দ্রুত সংযোগ পেয়ে যাব। দিনের পর দিন ঠিকাদারের কাছে ও গ্যাস কার্যালয়ে ঘোরাঘুরি করার পর জানতে পারলাম, আরও পাঁচ-ছয় মাস দেরি হবে। কারণ, মালামাল নেই।’
কেজিডিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, মালামালের সংকট নিরসনে তাঁদের করণীয় কিছু নেই। দেশে গ্যাস-সংযোগের জন্য ব্যবহৃত উপকরণ তৈরি করে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। পেট্রোবাংলার সঙ্গে বিসিকের চুক্তি থাকায় বিসিকের তালিকাভুক্ত এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে হচ্ছে। মাঝে তিন বছর গ্যাস-সংযোগ বন্ধ থাকায় নতুন করে চালুর পর সারা দেশেই সংযোগ-সরঞ্জামের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কিন্তু প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা না বাড়ায় চাহিদামাফিক মালামাল উৎপাদন করে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না তাদের পক্ষে।
কর্ণফুলী গ্যাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গত দুই মাসে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে তিন-চার ইঞ্চি এমএস পাইপের। বাংলাদেশে একটিমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড এই পাইপ তৈরি করে। কিন্তু সম্প্রতি বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলাসংক্রান্ত জটিলতায় তারা নির্ধারিত সময়ে পাইপ সরবরাহ করতে পারছে না।
কর্ণফুলী গ্যাসের ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিনিয়ত তাগাদা দিচ্ছি আমরা। আশা করছি, এ মাসের শেষ দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
জানা গেছে, মালামালের সংকট দূর করতে কর্ণফুলী গ্যাস কার্যালয়ে প্রতিনিয়ত ধরনা দিচ্ছেন ঠিকাদারেরা। কর্ণফুলী গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও কয়েক দফা স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম অলিউল্লাহ বলেন, সংযোগে ধীরগতির জন্য প্রায়ই গ্রাহকদের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।