অবেদনবিদ নেই, প্রসূতি অস্ত্রোপচার বন্ধ

অবেদনবিদ না থাকায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচ বছর ধরে প্রসূতি অস্ত্রোপচার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার প্রসূতিদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে গরিব পরিবারের প্রসূতিদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে এখানে জরুরি প্রসূতিদের অস্ত্রোপচার কার্যক্রম (ইওসি) শুরু হয়। একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, একজন শল্যবিদ ও একজন অবেদনবিদ (অ্যানেসথেটিস্ট) প্রসূতিদের অস্ত্রোপচার করতেন। কিন্তু ২০১০ সালে অবেদনবিদ বদলি হয়ে যাওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে কোটি টাকার অস্ত্রোপচার সরঞ্জাম থাকলেও প্রসূতিদের অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবেদনবিদ না থাকায় গ্রামাঞ্চল থেকে আসা গরিব প্রসূতিদের বাধ্য হয়ে ৯০ কিলোমিটার দূরের জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে অস্ত্রোপচার করাতে হচ্ছে। জেলা শহরে যেতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ২ হাজার ২০০ ও বেসরকারি পরিবহনে ২ হাজার ৭০০ টাকা লাগে।
উপজেলার রহমানপুর গ্রামের রজব আলী সম্প্রতি তাঁর প্রসূতি মেয়েকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ফিরে যান। তিনি জানান, কয়েক দিন আগে তাঁর মেয়ের প্রসববেদনা শুরু হওয়ার পর তিনি হাসপাতালে আসেন। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে তাঁর মেয়েকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু সেখানে নেওয়ার সামর্থ্য তাঁর ছিল না।
শ্রীরামপুর ইউনিয়নের কাউয়ামারী গ্রামের প্রসূতি আমেনা বেগম বলেন, ‘গরিবের জন্য হাসপাতাল। এই হাসপাতালে সিজার করিলে বাড়ির লোকজন খোঁজখবর নিবার পায়। হামাক লালমনিরহাটোত যাবার নাগবে। তা এটা (এখানে) হাসপাতাল থাকিয়া লাভ কী?’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রণব দাস বলেন, অবেদনবিদ না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রসূতিদের লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাতে হয়। তাই এখানে একজন অবেদনবিদ নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদ জানান, অবেদনবিদ না থাকায় আমরা ঠিকমতো সেবা দিতে পারছি না। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে।