সংঘাত থামাও

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন
জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাত বৃদ্ধির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশন। সংস্থাটি সব রাজনৈতিক দলকে এখনই সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এরই মধ্যে সংঘাতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং তা আরও বাড়তে পারে বলে তারা শঙ্কিত, যেমনটা দেখা গিয়েছিল গত নির্বাচনের আগে।
গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয়ের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে বিএনপি দেশজুড়ে অবরোধের ডাক দেওয়ার পর থেকে চলমান সংঘাতের শুরু। দলটির চেয়ারপারসন ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধা দেয় সরকার। এরপর থেকে সহিংসতায় এক ডজনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বিরোধী দলের অনেক বড় নেতাকে আটক করা হয়েছে।
একের পর এক যানবাহনে হামলার ঘটনাকে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার একটি যাত্রিবাহী বাসে দেওয়া আগুনে পুড়ে চারজনের (পরে হাসপাতালে একজন মারা যাওয়ায় সংখ্যাটি এখন পাঁচ) মৃত্যু হয়েছে। একই দিন বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং তাঁর গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। পরদিন গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাসে দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন একজন।
এই পরিস্থিতিতে সংযম প্রদর্শন এবং এখনই সংঘাত বন্ধের উদ্যোগ নিতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানায় জাতিসংঘের সংস্থাটি। একই সঙ্গে হত্যার ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিরোধী নেতাদের যে উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, সেটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা-ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এ ছাড়া শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, চলাচল ও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
এক দিন আগে বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকেরাও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমানকে গুলির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, যুক্তরাজ্য হাইকমিশন ও ইইউ দূতাবাস। পৃথক বিবৃতিতে তারা এই হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে।
ইইউ রাষ্ট্রদূত রাজনৈতিক ক্ষেত্র ‘সংকুচিত’ হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সহিংসতা রোধের তাগিদ দেন। তাঁর মতে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপগুলো মানুষের সমাবেশ, চলাচল ও বক্তব্যের অধিকার হরণের বিনিময়ে হওয়া উচিত নয়।