অবরোধে বাগানে স্তূপ হচ্ছে রাবারের কাঁচামাল

টানা অবরোধে মৌলভীবাজার জেলার বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন ও বেসরকারি রাবার বাগানে উৎপাদিত রাবারের কাঁচামাল পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। এতে বিভিন্ন বাগানে এক হাজার টনের বেশি কাঁচামাল আটকা পড়েছে। প্রক্রিয়াজাত না করে এভাবে দীর্ঘদিন গুদামে কাঁচামাল আটকে থাকলে রাবারের গুণগত মান পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে বাগান কর্তৃপক্ষ।
রাবার বাগান সূত্রে জানা গেছে, অবরোধে পরিবহন-সংকটে বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের সিলেট অঞ্চলের চারটি এবং মৌলভীবাজার জেলার বেসরকারি আটটি রাবার বাগানে রাবার উৎপাদনের কাঁচামালের মজুত বেড়ে চলছে।
পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উৎপাদিত কাঁচামাল বিক্রয় কেন্দ্রে পাঠানো যাচ্ছে না। ক্রেতারাও বাগানে আসছেন না। এতে শুধু সরকারি চারটি বাগানেই ১ হাজার ৪৯ টন কাঁচামাল জমা হয়েছে।
করপোরেশনের মৌলভীবাজার কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা রাবার বাগানের সহব্যবস্থাপক (মাঠ) আফতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অবরোধে বাগানের ১০০ টনের বেশি কাঁচামাল আটকা পড়েছে। প্রক্রিয়াজাত বিলম্বিত হলে এই কাঁচামালের গুণগত মান কমে যায়। যে কাঁচামাল দিয়ে প্রথম শ্রেণির রাবার হতো তা দ্বিতীয় শ্রেণির মানে নেমে যায়। তখন রাবারের সঠিক মূল্য পাওয়া যায় না।
একই অবস্থা শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও এবং হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলের রূপাইছড়া ও মাধবপুরের শাহজীবাজারের রাবার বাগানের।
করপোরেশনের সিলেট অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পরিবহন-সংকটে ভাটেরা রাবার বাগানে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬ কেজি, সাতগাঁও রাবার বাগানে ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৫০ কেজি, রূপাইছড়া রাবার বাগানে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮৪০ কেজি এবং শাহজীবাজার রাবার বাগানে ৩ লাখ ২০ হাজার ৮৮৯ কেজি কাঁচামাল জমে আছে।
বেসরকারি রাবার বাগান সূত্র জানায়, অবরোধে রাবারগাছ থেকে সংগৃহীত কষ (লেটেক্স) বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। গাছ থেকে এ কষ সংগ্রহের পর পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টার মধ্যে তা প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। অনেক রাবার বাগানে এই প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা এসে সরাসরি কষ কিনে নিয়ে যান। অবরোধের জন্য এসব ব্যবসায়ী আসতে পারছেন না।
বাংলাদেশীয় চা-সংসদের সিলেট অঞ্চলের ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান জিএম শিবলী গত বুধবার বলেন, তাঁদের বাগানে উৎপাদিত রাবার গুদামে জমা হচ্ছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাশিউক রাবার বিভাগ সিলেট অঞ্চল কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক শফি উদ্দিন আহমদ বুধবার বলেন, ‘আমরা রাবারের কাঁচামাল ঢাকায় পাঠাতে পারছি না। এগুলো পরিবহনের জন্য আমাদের দুটি ট্রাক বসে আছে।’