কারাগারে ধারণক্ষমতার তিন গুণ আসামি

সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে প্রতিদিনই আসামির সংখ্যা বাড়ছে। নাশকতাসহ বিভিন্ন অপরাধে গত তিন সপ্তাহে পুলিশ এক হাজারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে ধারণক্ষমতার তিন গুণের বেশি বন্দী রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, জেলা কারাগারে ধারণক্ষমতা ৪০০ জনের। এর মধ্যে ৩৬০ জন পুরুষ ও ৪০ জন মহিলা। গত বৃহস্পতিবার এই কারাগারে বন্দীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৮৫ জন। এর মধ্যে হাজতির সংখ্যা ১ হাজার ৮৮ জন। আর কয়েদি ছিল ৩৯৭ জন।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি দুপুর পর্যন্ত তিন সপ্তাহে নাশকতাসহ বিভিন্ন অপরাধে এক হাজার একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ২৭৫ জন জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মী। এ ছাড়া জামায়াতের তিনজন ও বিএনপির একজন নেতাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, যাঁদের নামে মামলা বা অভিযোগ নেই, তাঁদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সাতক্ষীরায় তাঁদের কোনো আন্দোলন না থাকার পরও তাঁদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম বলেন, সাতক্ষীরায় বিএনপি কোনো নাশকতা করেনি। অথচ ইতিমধ্যে তাঁদের পাঁচজন নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। গুলি ছুড়ে সাতজন নেতা-কর্মীকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। অভিযোগ না থাকার পরও চলমান আন্দোলন দমাতে বিএনপির নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
জেলা কারাগারের কারাধ্যক্ষ আবু তালেব জানান, জেলা কারাগারে ধারণক্ষমতা ৪০০ জন হলেও ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ জন আসামির থাকতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। কাউকে অহেতুক ও অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ নৈমিত্তিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে অভিযান চালাচ্ছে। কয়েক মাস আগে পুলিশের ওপর হামলা ও বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন হতাহত হয়। যাঁরা হতাহত হয়েছে, তাঁরা সন্ত্রাসী। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।