ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনে কাজ শুরুর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: ফোকাস বাংলা

ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিভাগকে দেশের অষ্টম প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণার প্রস্তাবে সায় দিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) পাঠাতে বলেছে সরকার।

আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘নির্দেশনামূলক এই সিদ্ধান্ত’ হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা জানান।

বৈঠক শেষে মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভার সম্মতি পাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এখন এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। কয়টি জেলা ও কত আয়তন নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত হবে, তা নিকার বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে। সচিব বলেন, ময়মনসিংহ ছাড়াও বৃহত্তর ফরিদপুর এবং বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীকে নিয়ে আরও দুটি বিভাগ করার উপযোগিতা আছে কি না, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে তা দেখতে বলেছে মন্ত্রিসভা। ময়মনসিংহ বিভাগের কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যৌক্তিক সময়ের’ মধ্যেই সব কাজ শেষ করা হবে। আগের দিনই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে ঢাকাকে ভেঙে তিনটি বিভাগ করার পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মানুষকে সত্যিকারভাবে সেবা দিতে গেলে, উন্নয়ন করতে গেলে, সবচেয়ে ভালো হতো যদি আমরা ঢাকাকে তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি। ’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রশাসনিক নতুন বিভাগ করতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, নতুন বিভাগ থানা বা জেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নিকার বৈঠকে। মন্ত্রিসভায় ‘নির্দেশনামূলক সিদ্ধান্ত’ হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। সচিব জানান, ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনে এখন একটি কমিটি করা হবে। এই কমিটি বিস্তারিত সবকিছু তৈরি করে নিকারের বৈঠকে তুলবে। কোন কোন জেলা নিয়ে বিভাগ হবে, সেখানে কোন কোন দপ্তর থাকবে, তা নিকারেই চূড়ান্ত হবে।

আজকের বৈঠকে শাস্তির বিধান যুগোপযোগী করে ‘চা আইন-২০১৫ ’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, শাস্তির বিধান আগে বিস্তৃতভাবে বলা ছিল না, শাস্তির মাত্রাও কম ছিল। এটি যুগোপযোগী করা হয়েছে। আইন ভঙ্গে শাস্তির বিধান ন্যূনতম ছয় মাস ও সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে। জরিমানার বিধান আগেও ছিল, তা এবারও রাখা হচ্ছে। কী পরিমাণ জরিমানা হবে, তা ভোটিংয়ের সময় চূড়ান্ত করা হবে বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, মূলত সামরিক শাসনামলের ‘টি অর্ডিনেন্স ১৯৭৭ ’ এবং এরপর ‘টি অ্যামেন্ডমেন্ট অর্ডিনেন্স ১৯৮৬ ’ অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করার জন্যই এ উদ্যোগ। বাংলাদেশে চা আবাদের জন্য ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমি বরাদ্দ রয়েছে ও ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। চা-বাগানের বেশির ভাগ বেসরকারি মালিকানায়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এগুলোর উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার চা বোর্ড করেছে। চা বোর্ড কীভাবে কাজ করবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। চা বোর্ডে একজন নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হবেন। চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনার এর সদস্য রয়েছেন, সিলেট বিভাগের কমিশনারকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বোর্ডের কার্যাবলির মধ্যে নতুন দুইটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একটি হচ্ছে গবেষণা, অন্যটি হচ্ছে চায়ের গুণগত মান নির্ধারণ এবং মান নিশ্চিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

চা বিক্রির বিষয়টি আরও বিস্তারিত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে শুধু নিলাম ছিল। নতুন আইনে চা বিক্রয় বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে একটি উপদেষ্টা পরিষদ ছিল। তা বিলুপ্ত করা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।