বাড়তি টাকা ফেরত পায়নি শিক্ষার্থীরা

উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের রুসদী উচ্চবিদ্যালয়ের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (এসএসসি) ফরম পূরণের অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা এই অভিযোগ করেছেন।
বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রুসদী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ বছর ১২৬ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে। সরকার ফরম পূরণে ১ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। দরিদ্র শিক্ষার্থীরাও এর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তবে এই বাড়তি টাকার বিপরীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো রসিদ দেয়নি।
এসএসসি পরীক্ষার্থী সায়মা আক্তার জানায়, ফরম পূরণের জন্য তাকে ৫ হাজার ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায়ের খবর পেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অতিরিক্ত টাকা ফেরত চাইলে তারা টালবাহানা শুরু করে। কয়েক দিন আগে তাকে মাত্র দেড় হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
পরীক্ষার্থী ইলমা আক্তারের বাবা আবদুর রশীদ খান বলেন, মেয়েকে ফরম পূরণের জন্য ৫ হাজার ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে। তিনিও মাত্র দেড় হাজার টাকা ফেরত পেয়েছেন।
কুকুটিয়া ইউনিয়নের পাঁচলদিয়া গ্রামের শিক্ষার্থী দোলা আক্তারের বাবা দুলাল শিকদার বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ফরম পূরণে এত টাকা দিতে পারব না বলে জানালেও তারা আমাকে ফিরিয়ে দেয়। পরে ঘরের চাল বিক্রি করে মেয়ের জন্য চার হাজার টাকা নিয়ে তাদের হাতে-পায়ে ধরে কোনোরকমে মানিয়েছি।’
অভিভাবকেরা আরও অভিযোগ করেন, ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে কোচিং ক্লাসের কথা বলে আরও ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে এমন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত এক হাজার টাকা করে নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে এই টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে যাদের কাছ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে, তাদেরকে দেড় হাজার টাকা করে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন দাবি করেন, সরকার নির্ধারিত টাকা ছাড়া বাকি টাকা তাঁরা ফেরত দিয়েছেন। তবে কত টাকা ফেরত দিয়েছেন, সেটা তিনি বলতে পারেননি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম বলেন, ‘উচ্চ আদালতের আদেশে আমরা স্কুলগুলোকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়েছি। রুসদী উচ্চবিদ্যালয় প্রায় সময়ই ঝামেলা করে। এর আগেও ক্লাস বন্ধ রেখে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য স্কুল ভাড়া দিয়ে পরিচালনা কমিটি সমস্যা সৃষ্টি করেছিল।’