বড় ভাইয়েরা বোতলভর্তি পেট্রল এনে দেন

বড় ভাই মনিরুজ্জামান, স্বাধীন মিয়া ও সাদ্দাম হোসেন সেভেন আপের বোতলভর্তি পেট্রল এনে তাঁদের হাতে তুলে দেন। তাঁরা গাড়িতে আগুন দিতে বলেন। ‘দল করি, সেই কারণে বড় ভাইদের মুখের ওপর না করতে পারিনি। কিন্তু গাড়িতে পেট্রল ঢালার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় লোকজন দেখে ফেলে। পরে লোকজন আমাদের ধরে ফেলে। বিপদ বুঝে বড় ভাইয়েরা পালিয়ে যান।’
নাশকতা চালানোর সময় জনতার হাতে আটক হওয়া কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার মনির হোসেন ও জসিম মিয়া নামের যুবদলের দুই কর্মী গত শনিবার সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন। কিশোরগঞ্জের জ্যেষ্ঠ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক শাহাদৎ হোসেন তাঁদের এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
নাশকতার পরিকল্পনাকারী মনিরুজ্জামান বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, স্বাধীন মিয়া জাতীয়তাবাদী তরুণ দল উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাদ্দাম সাধারণ সম্পাদক।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে নাশকতা প্রতিরোধে স্থানীয় তরুণদের দিয়ে পাড়া-মহল্লায় কমিটি গঠন করে দেয় পুলিশ। কয়েক দিন ধরে কমিটির সদস্যরা সড়কে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি করছেন। শুক্রবার রাত নয়টার দিকে প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের হাতে জসিম ও মনির আটক হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ফাঁসাতে ও মামলা দিয়ে এলাকাছাড়া করতে পুলিশ নাশকতা চালানোর এ নাটক সাজিয়েছে। যাদের দিয়ে সড়ক পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে তারা ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার। সুযোগ বুঝে ওই সব ক্যাডার বিএনপির নেতা-কর্মীদের নানাভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে মুঠোফোনে মনিরুজ্জামান, স্বাধীন ও সাদ্দামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি।
বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সাহা জানান, জবানবন্দিতে মনির ও জসিম আরও জানিয়েছেন, ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের বাজিতপুর অংশের সুবিধাজনক স্থানে তাঁদের নাশকতা চালানোর কথা ছিল। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাতে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা আরও কয়েকজনকে নিয়ে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে যান। গজারিয়া এলাকায় তাঁরা নাশকতা চালাতে কয়েকটি যানবাহনের গতিরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁদের আটক করা হয়।