সাংবাদিক-শিক্ষার্থীকে পুলিশের পিটুনি

ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজ-এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক নাজমুল হুদা ও তাঁর বন্ধু খায়রুজ্জামানকে গতকাল রোববার পিটিয়েছে পুলিশ। তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি আছেন।
নাজমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ও খায়রুজ্জামান ব্যবস্থাপনা বিভাগে পড়েন। তাঁরা দুজনই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
রাতে আহত নাজমুল প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা দুজন একই মোটরসাইকেলে করে রাজধানীর ফকিরেরপুলে যাওয়ার সময় বিজয়নগর মোড়ে তাঁদের পুলিশ আটকায়। দুজন বসা নিষেধ জানিয়ে মোটরসাইকেলটি আটক করা হয়। একই সময় একটি মোটরসাইকেলে দুজন পুলিশ বিজয়নগর মোড়ের দিকে আসেন। নাজমুল তাঁর মুঠোফোনে এ দৃশ্য ধারণ করেন।
পুলিশ আরোহী ছবি তোলার কারণ জিজ্ঞাসা করলে নাজমুল নিজেদের মোটরসাইকেল আটকের কথা বলেন। তখন ওই পুলিশ সদস্য বলেন, পুলিশের জন্য কোনো আইন নেই। আইন সাধারণ মানুষের জন্য। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই পুলিশ তাঁকে চড়-থাপড় মারেন। এ সময় রমনা থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান আরও কয়েকজনকে নিয়ে এসে রাইফেলের বাঁট দিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করে পুলিশের গাড়িতে ওঠান। গাড়িতেও তাঁদের মারধর করা হয়।
নাজমুল ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, থানায় গিয়েও তাঁদের বেধড়ক মারা হয়। এতে তাঁর মাথা ফেটে যায়। রাত সাড়ে আটটার দিকে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ও ছাত্রলীগ নেতারা তাঁকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, দুজনের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাজমুলের মাথার এক পাশ ফেটে গেছে। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে এখন চিকিৎসাকেন্দ্রে রয়েছেন।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মসিউর রহমান ঢাকা মেডিকেলে নাজমুল ও তাঁর বন্ধুকে দেখতে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অমানবিক। ওই পুলিশ সদস্য তাঁর পেশাদারির পরিচয় দেননি। তাঁর ব্যাপারে সর্বোচ্চ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’