কাজ শেষে টাকা না পেয়ে বিপাকে ঠিকাদারেরা

জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ২০১৩ সালে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর তীরের দুই কিলোমিটারের ভাঙন রোধে বাঁধ দেওয়া হয়। ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধটি তৈরি করতে ঠিকাদারেরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ধারদেনা করেন। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় না হওয়ায় ঋণের দায়ে এখন তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। নড়িয়া উপজেলার চণ্ডীপুর লঞ্চঘাট এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। পাউবো ২৫০ মিটার করে আটটি গুচ্ছে আটজন ঠিকাদার দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। ২০১৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করা হয়। ২৫০ মিটারের প্রতিটি গুচ্ছে বালু ভর্তি ২১ হাজার জিও ব্যাগ ও ৩৯ হাজার চটের ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। নদীর তীর থেকে তলদেশের দিকে ২৫ মিটার পর্যন্ত ব্যাগগুলো দেওয়া হয়। ওই বছর জুলাই মাসের প্রথম দিকে এ এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। এক মাসব্যাপী ভাঙনে প্রকল্পটির ৭০০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
প্রকল্পটি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য পাউবোর প্রধান কার্যালয় আগস্ট মাসে একটি কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি সেপ্টেম্বরে প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনে ঠিকাদারদের বিল দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।
প্রকল্পের ঠিকাদার স্বপন খান বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন ঋণের চাপ আর সহ্য করা যাচ্ছে না।
ঠিকাদার সাখাওয়াত হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘আমরা স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ী। সর্বস্ব বিনিয়োগ করেছি প্রকল্পটিতে। ঋণে জর্জরিত হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। বিল পাওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিতে হচ্ছে।’
শরীয়তপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল খালেক বলেন, ‘বিল দিতে না পারায় ঠিকাদাররা আমাকে চাপ দিচ্ছে। অনেক চিঠি চালাচালি করেও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট থেকে অর্থ ছাড় করাতে পারিনি।’