বরাদ্দপত্রের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নামের গরমিল
বিতরণ হচ্ছে না আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাভাতা
মহেশখালীর আনন্দ স্কুলের ২ হাজার ৪৪ জন শিক্ষার্থীর শিক্ষাভাতা বিতরণ বন্ধ রয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৭৩ জনের নামের সঙ্গে বরাদ্দপত্রে থাকা নামের গরমিল হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।
আনন্দ স্কুলের শিক্ষকেরা জানান, গত বছরের আগস্ট মাসে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আনন্দ স্কুলের ২ হাজার ৫৪৯ জন শিক্ষার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। তার মধ্যে গত বছরের ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ২ হাজার ৪৪ জন অংশ নেয়। ৫০৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। পরীক্ষা শেষে বরাদ্দপত্র এলে দেখা যায়, পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৬৭৩ জনের শিক্ষার্থীর নামের গরমিল রয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ২১টি বিদ্যালয়ের ১৫৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষাভাতার বরাদ্দ আসেনি। এ কারণে শিক্ষাভাতার বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তবে আনন্দ স্কুলের শিক্ষকেরা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীর শিক্ষাভাতা দেওয়ার দাবিতে আনন্দ স্কুলের প্রকল্প পরিচালকের বরাবরে একটি আবেদন করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের ২৪৫টি আনন্দ স্কুলের ২ হাজার ৬৭০ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা ও সমাপনী পরীক্ষার ভাতার বিপরীতে ৪২ লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এতে প্রতিজন ছাত্র ১ হাজার ৬০০ টাকা করে পাওয়ার কথা। তবে নামের জটিলতার কারণে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ভাতা বিতরণ বন্ধ আছে।
আনন্দ স্কুলের মহেশখালী উপজেলা প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী আবদুল লতিফ বলেন, ২ হাজার ৬৭০ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষাভাতা ও সমাপনী পরীক্ষার জন্য ৪২ লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। কিন্তু তার মধ্যে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ২ হাজার ৪৪ জন। আর ২১টি স্কুলের ১৫৮ জন শিক্ষার্থীর কোনো বরাদ্দ আসেননি। তিনি বলেন, পরীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছে তাদের ওই ভাতা দেওয়ার কথা। কিন্তু বরাদ্দপত্রের সঙ্গে শুধু ১ হাজার ২১৩ জনের নাম ও ছবির মিল রয়েছে। বাকি ৬৭৩ জনের সঙ্গে নামের কোনো মিল নেই। তাই এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস থেকে নতুন করে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। তবে বরাদ্দপত্রের সঙ্গে মিল না থাকা শিক্ষার্থীরা বহিরাগত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা জরিপ চলাকালে বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল না। এ কারণে বরাদ্দপত্রে তাদের নাম আসেনি।
আনন্দ স্কুলের শিক্ষক সাজ্জাদুল আলম বলেন, তাঁর স্কুল থেকে ছয়জন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। কিন্তু শিক্ষাভাতার বরাদ্দপত্রে ভুলের কারণে ছয়জনের মধ্যে চারজনের নামের মিল নেই। তাই চারজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাভাতা দেওয়ার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি আবেদন করা হয়।