সাভারে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা

নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ গত শুক্রবার রাতে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে আওয়ামী লীগের এক নেতার বাড়িতে অভিযান চালায়। তাঁকে না পেয়ে পুলিশ ওই নেতার ছেলে জসিম উদ্দিনকে আটক করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের হেফাজত থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নেয় জনতা।
জসিম বিরুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি জিন্নত আলীর ছেলে। তিনি সিরামিক ও জমিজমার ব্যবসা করেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সাভার মডেল থানার একদল পুলিশ সাদা পোশাকে তাঁদের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকে। রাতে বাড়ির আঙিনায় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির ভেতর থেকে তাঁদের পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। এ সময় তাঁরা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয় দিয়ে ঘরের দরজা খোলার অনুরোধ জানান। সন্দেহ হলে তাঁরা সাভার থানা ও ডিবি পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তাঁদের (পুলিশ কর্মকর্তা) কাছ থেকে কোনো তথ্য না পেয়ে তাঁরা বিষয়টি প্রতিবেশীসহ এলাকাবাসীকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে সাভার থানা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আল-আমিনসহ কয়েকজন প্রতিবেশী ওই বাড়িতে যান। পরে তাঁদের উপস্থিতিতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকে চারতলা বাড়ির প্রতিটি কক্ষে তল্লাশি চালায়। পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কাউকে না পেয়ে পুলিশ তাঁকে (জসিম) আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ডাকাতের কথা প্রচার করে এলাকার লোকজন জড়ো করা হয়। পরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের হেফাজত থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নেয়। পরে পুলিশ চলে যায়।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোতালেব হোসেন মিয়া বলেন, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে জসিমের সখ্য রয়েছে—এমন তথ্য পাওয়ার পর তাঁকে (জসিম) নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। ওই ব্যক্তি শুক্রবার রাতে জসিমদের বাড়িতে অবস্থান করছেন—এমন তথ্যের ভিত্তিতেই ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তাঁকে না পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জসিমকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু জনতার বাধার কারণে তাঁকে থানায় আনা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
জিন্নত আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমাদের পরিবার ও স্বজনেরা কোনো না কোনোভাবে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। আমার পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক। লাভের জন্য বা কারও স্বার্থ উদ্ধারে পুলিশ এ নাটক সাজিয়েছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে সাভার মডেল থানার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শফিকুল ইসলাম বলেন, নাশকতামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তির সঙ্গে জসিমের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে—এ অভিযোগের বিষয়ে কিছু তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। ওই সব তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়।