পুলিশ বলছে ডাকাত, পরিবারের অস্বীকার

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইকবাল হোসেন (৩৪) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার ভোরে কালীগঞ্জ-মল্লিকপুর সড়কের শালিখা নুড়িতলায় এ ঘটনা ঘটে। তবে পরিবারের দাবি, ইকবাল হোসেনকে তিন দিন ধরে অজ্ঞাত স্থানে রাখার পর গতকাল ভোরে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, মল্লিকপুর সড়কের নুড়িতলায় একদল ডাকাত রাস্তায় গাছ ফেলে ডাকাতি শুরু করে। ওই সময় পুলিশের একটি টহল দল সেখানে পৌঁছালে ডাকাতেরা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। উভয়ের মধ্যে প্রায় ৩০ মিনিট গোলাগুলি হয়। পরে ডাকাত দল পিছু হটে। এ সময় তারা ঘটনাস্থল থেকে এক ডাকাতকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর নাম ইকবাল হোসেন।
পুলিশ জানায়, তারা ঘটনাস্থল থেকে রিভলবার, গুলি, চাপাতি, ছুরি ও দড়ি উদ্ধার করেছে। ইকবালের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা থানায় পাঁচটি ডাকাতি ও চুরির মামলা রয়েছে।
এদিকে পুলিশের বক্তব্যকে গৎবাঁধা বানোয়াট গল্প বলেছেন ওই এলাকাবাসী। এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা বলেন, যেখানে ডাকাতি হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করছে, সেখানে ওই সময় ডাকাতির কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুলিশ পুরোপুরি মিথ্যা বলছে। ইকবাল মোটেও ডাকাত ছিলেন না। তিনি একজন শ্রমজীবী। ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন।
ইকবালের বোন শিউলী খাতুন জানান, তাঁর ভাই ঢাকায় সিএনজি চালাতেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে বেড়াতে আসতেন। গত শনিবার বাড়িতে এসে মঙ্গলবার চলে যান। এরপর তাঁরা ইকবালের আর কোনো সন্ধান পাননি। পুলিশ তাঁকে অজানা স্থানে লুকিয়ে রেখেছিল। শনিবার ভোর চারটার দিকে নুড়িতলায় নিয়ে তাঁকে মেরে ফেলে।
ইকবাল হোসেনের মা আছিয়া খাতুন জানান, ইকবাল তাঁর বড় ছেলে। সিহাব হোসেন (১০) ও শিলা (৭) নামে তাঁর দুটি সন্তান আছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর ইকবালের লাশ গতকালই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।