৫৪টি প্রশাসনিক পদ ছাড়লেন শিক্ষকেরা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ৫৪টি পদ থেকে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে গত বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর অপসারণ দাবি করে আসছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম’।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৪৮টি পদত্যাগপত্র মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রেজিস্ট্রারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বিকেল চারটার দিকে আরও ছয়টি পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আবদুল খালেক পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক জানান, প্রশাসনের পদে থাকা শিক্ষকদের মধ্যে যাঁরা ক্যাম্পাসের বাইরে আছেন, তাঁদের পদত্যাগপত্র পাওয়ামাত্র রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
পদত্যাগের বিষয়ে উপাচার্য মো. রফিকুল হকের মন্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করলে দিলে তিনি ফোন ধরেননি।
ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্রলীগ। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ওই মানববন্ধন হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মুর্শেদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন সহসভাপতি বিজয় বর্মণ, ওয়াহাব রিন্টু, লিমন দেব প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা শিক্ষকদের নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে উপাচার্যের সঙ্গে তৃতীয় শ্রেণির এক নারী কর্মচারীর কথোপকথনের অডিও এবং কয়েকটি স্থিরচিত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ আনা হয়। ওই অডিও ও স্থিরচিত্র ক্যাম্পাসসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। অবশ্য উপাচার্য ঘটনার পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র বলে দাবি করে আসছেন।
তদন্ত কমিটি গঠন: অডিও ও স্থিরচিত্র ফাঁস ও তা সিডি করে বিতরণের ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কিমিটি গঠন করেছেন উপাচার্য। কমিটির আহ্বায়ক এনাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের শিক্ষক মো. আবদুল আউয়াল এবং সদস্যসচিব উপাচার্যের সচিবালয়ের সেকশন কর্মকর্তা শাহ মুহসিনুল হক। অন্য সদস্যরা হলেন পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মুহাম্মদ আসলাম আলী এবং পশুবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক সৈয়দ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান।