সরকারের মনোভাব বুঝতে চাইছে বিএনপি

ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়া নিয়ে আজকালের মধ্যে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে বিএনপি। দলটি এখন শেষ মুহূর্তে সরকারের মনোভাব বুঝার চেষ্টা করছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি-সমর্থক শত নাগরিকের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মূলত নির্বাচন প্রশ্নে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অবস্থান ও মনোভাব বুঝতে চাইছে বিএনপি। যেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়, তাই দলের প্রতিনিধি না পাঠিয়ে বিশিষ্ট নাগরিকদের এখানে যুক্ত করা হয়েছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি এ সপ্তাহে হরতাল না বাড়িয়ে সরকারকে একটি বার্তা দিয়েছে। এখন দেখার বিষয় সরকার বার্তাটি কীভাবে গ্রহণ করে এবং পাল্টা কোনো বার্তা দেয় কি না। কেমন বার্তা সরকারের কাছ থেকে তাঁরা আশা করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন সংক্রান্ত। কিছু বিষয়ে বিএনপির উদ্বেগ আছে। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন বিষয়গুলো কীভাবে দেখছে সেটি গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপির চেয়ারপারসনের ওই উপদেষ্টা বলেন, আজ রাত বা আগামীকালের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

সূত্র জানায়, এখনো নির্বাচন প্রশ্নে পক্ষে-বিপক্ষে বিএনপিতে দুই ধরনের মত আছে। তবে যাওয়ার পক্ষেই পাল্লা ভারী। সে লক্ষ্যে বিএনপি সার্বিক প্রস্তুতিও ভেতরে-ভেতরে সেরে রাখছে। ইতিমধ্যে ঢাকা উত্তর ও চট্টগ্রামে মেয়র প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত করেছে। ঢাকা দক্ষিণে উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজছে দলটি। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর, দক্ষিণে কাউন্সিলর পদে কারা কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তা-ও অনেকটা চূড়ান্ত করা আছে। তবে বিএনপি কয়েকটি বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন। নির্বাচনে গেলে তাদের প্রার্থী বা নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকতে পারবেন কি না, গ্রেপ্তার-হয়রানি করা হবে কি না, প্রচারের সমান সুযোগ পাবেন কি না—এ বিষয়গুলো বিএনপিকে এখনো ভাবাচ্ছে। কারণ দলটির সম্ভাব্য প্রার্থী এবং যাঁরা প্রার্থীর জন্য কাজ করবেন-তাদের প্রায় সবাই হয় জেলে নয় মামলার আসামি হয়ে থাকছেন আত্মগোপনে। নির্বাচনের পাশাপাশি আন্দোলন কীভাবে চালানো হবে সেটিও গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। সিটি নির্বাচনের তফসিল পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করার বিষয়েও দলে মত আছে। কেউ কেউ নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত হিসেবে রাজনৈতিক মামলায় আটক দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করার পক্ষে। তবে যেহেতু এটি নির্দলীয় নির্বাচন তাই এ বিষয়ে কৌশলী ভূমিকা নিচ্ছে বিএনপি। বিএনপি-সমর্থক শত নাগরিককে সামনে রাখছে দলটি।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে এখনো আলোচনা চলছে। দলে দু ধরনের মত আছে। যদি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং সমান সুযোগ নিয়ে প্রচার চালানোর নিশ্চয়তা থাকে তাহলে বিএনপি যাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক।