অবকাঠামো ও জনবল সংকটে সেবা বিঘ্নিত

অবকাঠামো ও জনবলসংকটের কারণে নওগাঁ আধুনিক সদর হাসপাতালে রোগীরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না। জেলার প্রধান এই সরকারি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর হলেও এতে এখনো শয্যা বাড়ানো হয়নি।
গত চার দিন সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেডিসিন, সার্জারি, শিশু, দন্ত, চক্ষু, গাইনি ও প্রসূতি, হূদেরাগ, অর্থোপেডিক, প্যাথলজি ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগে প্রায় ৭০০ জন রোগী অপেক্ষা করছেন। তবে রোগী দেখার দায়িত্বে আছেন মাত্র সাতজন চিকিৎসক। নিউরোলজি, চর্ম ও যৌন বিভাগ নেই।
নাক-কান-গলা (ইএনটি) ও জরুরি বিভাগ থাকলেও কোনো চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়নি। সেবিকার সংখ্যাও খুবই কম। ওয়ার্ড বয়, আয়া ও লাশ কাটাছেঁড়ার জন্য ডোম নেই।
ইসিজি মেশিন চালু থাকলেও আধুনিক এক্স-রে মেশিন নেই। রোগীদের জন্য রয়েছে আটটি করে ওয়ার্ড ও কেবিন। কেবিনের অবস্থা কিছুটা ভালো। তবে ওয়ার্ডগুলো প্রায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। এসব ওয়ার্ডে ১০০ জন রোগী থাকার ব্যবস্থা থাকলেও সব সময়ই ১৫০ থেকে ২০০ জন রোগী থাকছেন।
মহাদেবপুরের সরস্বতীপুরের জামাল উদ্দিন জানান, তিন বছরের বাচ্চার শ্বাসকষ্টের জন্য শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে এসেছেন। কিন্তু শত শত রোগীর কারণে সিরিয়াল পাননি।
রানীনগরের কুবরাতলীর মোড়ের আব্বাস আলী জানান, তাঁর ছেলের গলায় ব্যথা। খেতে ও কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে। দুই দিন ধরে কানেও শুনতে পাচ্ছে না। তবে হাসপাতাল এসে দেখেন, চিকিৎসক নেই।
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহফুজার রহমান জানান, হাসপাতালে ইএনটি বিভাগ থাকলেও এর জন্য চিকিৎসক নেই। জরুরি বিভাগেও চিকিৎসক নেই।
নওগাঁর সিভিল সার্জন (সিএস) আলাউদ্দিন জানান, ১০০ বা ২৫০ শয্যা, যেটাই ঘোষণা হোক না কেন, আসলে সদর হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়নের অভাব ও জনবলসংকট রয়েছে। এখানে ১০০টি শয্যা আছে এবং এর জন্য খাবারের ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া সবকিছুই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সমান। জেলায় ২৯০ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও মাত্র ৭৭ জন কর্মরত আছেন। ৩০০ এমএমের একটি আধুনিক এক্স-রে মেশিন খুব জরুরি।